বিজ্ঞাপন দিন

জলঢাকায় ইউএনডিপি’র ত্রাণসামগ্রী বিতরনে অনিয়মের অভিযোগ

ফরহাদ ইসলাম,জলঢাকা প্রতিনিধিঃ উত্তরের অবহেলিত জেলা নীলফামারীর জলঢাকায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে দাতা সংস্থা ইউএনডিপি’র ত্রাণসামগ্রী বিতরনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এবারের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হতদরিদ্র পরিবার গুলোর মধ্যে এ ত্রাণ সামগ্রী বিতরনের নিয়ম থাকলেও বাস্তবে ঘটেছে তার ব্যতিক্রম। গত ১৫ থেকে ১৮ জানুয়ারী পযর্ন্ত চার দিনব্যাপী উপজেলা পরিষদ চত্বরে ‘চায়না এইড’ ও ‘ইউএনডিপি’র আর্থিক সহযোগিতায় এসকেএস ফাউন্ডেশনের তত্বাবধানে উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে ২বান্ডিল টিনসহ ৮প্রকার ত্রাণ সামগ্রী ৬৫০ পরিবারের মধ্যে বিতরন করা হয়, যার মধ্যে অধিকাংশই বিত্ত্ববান,পাকা বাড়ীর মালিকসহ চেয়ারম্যানদের নিকট আত্মীয় পেয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাস্তবায়নকারী সংস্থা ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার গুলোর তালিকা সরেজমিন তদন্ত করার কথা থাকলেও তা না করে স্কুলের ছোট ছোট শিক্ষার্থী স্কাউট সদস্যদের দিয়ে শতকরা ১০ থেকে ১৫ভাগ পরিবারের তদন্ত করেছে বলে জানান ওই সংস্থার উর্ধ্বতন কর্মকর্তা। 

গত শনিবার ও মঙ্গলবার ডাউয়াবাড়ী,শৌলমারী ও ধর্মপাল ইউনিয়নে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ দুঃস্থ অনেক পরিবারই এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের নেকবক্ত পূর্বপাড়া গ্রামের বন্যায় বানভাসী প্রায় শতবর্ষী বৃদ্ধ ছোলেমান আলী কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন,‘বাবারে বানোত ভাসি হামা,দানের টিন পায় ওমা,মুই সুন্নু হামার এটে পাকা বাড়ী এ্যলা ছাদের ও তার কয়ও ভাইয়ে টিন পাইছে,হামাক ফির না দেয় ক্যানে।’ বৃদ্ধার কথা শুনে,ওই এলাকার মৃত মফিছ উদ্দিনের ছেলে ছাদের হোসেনের বাড়ী গেলে বৃদ্ধার কথার সত্যতা পাওয়া যায়। ৪নং ওয়ার্ডেই নয়, এমন ঘটনা ওই ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন সুবিধা বঞ্চিত বানভাসীরা। শুধু ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়নে নয় এমন অভিযোগ বিতরণকৃত প্রতিটি ইউনিয়ন থেকে পাওয়া গেছে। 

ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারন সম্পাদক মোরশেদুল ইসলাম বলেন,‘তিন থেকে চার হাজার করে টাকা নিয়ে চেয়ারম্যান সাহেব বিত্ত্ববান ও পাকা বাড়ীর মালিকদের নাম তালিকা করে এ ত্রাণের মাল বিতরণ করেছেন।’ এদিকে অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে ডাউয়াবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রোকনুজ্জামান খোকনের সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে, তিনি যোগ্য লোককেই দেওয়া হয়েছে বলে ফোন কেটেঁ দেন ।

 অনিয়মের বিষয়ে বাস্তবায়নকারী সংস্থা এসকেএস ফাউন্ডেশনের সিডিও আমিনুর রহমান বলেন, ‘আমরা চেয়ারম্যানদের কাছ থেকে তালিকা নিয়ে শতকরা ১৫ভাগ তালিকা স্কাউট সদস্যদের দিয়ে যাছাই-বাছাই করে বিতরণ করেছি।’ এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহঃ রাশেদুল হক প্রধান বলেন, ‘সুষ্ঠুভাবে বিতরণে জন্য এসকেএস ফাউন্ডেশন উপজেলা প্রশাসনের সহযোগীতা নিয়েছে,তবে আমরা এ বিষয়ে জড়িত না।’