বিজ্ঞাপন দিন

ইলোরা জাহান এর কবিতা " রুপবতী "


 কবিতা



রুপবতী

                                            ইলোরা জাহান

                                                            প্রধান শিক্ষক

                                        খামার বামুনিয়া ঢেপিরপাড় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়



দেশ ও আমার

 তোর রূপের নেইকো শেষ,

 যে দিকে তাকাই শুধু

তোর রূপেরি রেশ।।

পাহাড়, পর্বত, নদীর ধারা

 তোর রূপে পাগল পারা।

তোর রূপে যায় হারিয়ে

দিঘির শতদল

এত রূপ তোর অঙ্গেঁ

কোথায় পেলি বল ?

রূপ দেখে তোর কোলের

শিশু অবাক চেয়ে রয়,

ছেলে বুড়ো তোর ভাষাতে

মনের কথা কয়

মনের কথা বলতে মোরা

করি নাক ভয়

কথা দিলাম তোর জন্য

করব বিশ্ব জয়।

#





প্রবন্ধ



স্বাধীনতা অর্জনে অনন্য নেপথ্য ভূমিকা বঙ্গমাতা



বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি-চির কল্যাণকর,অর্ধেক তার করিয়াছে নারী-অর্ধেক তার নর।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের দীর্ঘ প্রেক্ষাপটে যার অসাধারণ নেপথ্য ভূমিকা ছিল, তিনি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। তিনি দুঃসময়ে বঙ্গবন্ধুকে প্রেরণা জুগিয়েছেন, পরামর্শ দিয়েছেন, সাহস জুগিয়েছেন।

১৫ই আগষ্ট এই হত্যাকান্ড ঘটেছিল কেন ? একটাই কারণ জাতির পিতা দেশ স্বাধীন করেছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে তার ডাকে সাড়া দিয়ে লাখো মানুষ অস্ত্র তুলে সেই যুদ্ধ করেছেন।



পৃথিবীর ইতিহাসে কত নাম না জানা ঘটনা থাকে। আজকে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি, স্বাধীন জাতি। কিন্তু এই স্বাধীনতা অর্জনের জন্য সংগ্রাম করেছেন যেমন জাতির জনক তেমনি পরোক্ষ ভাবে যুদ্ধ করেছেন বঙ্গমাতা।



মায়ের জন্মের পরেই তার পিতা মারা যান। তার বয়স মাত্র তিন বছর। তার বাবা শৌখিন ছিলেন তিনি যশোরে চাকরি করতেন এবং বলতেন দুই মেয়েকে বি,এ করাব। সেই যুগে টুঙ্গি পাড়ার মতো অজপাড়া গায়ে ঢাকা থেকে যেতে লাগত ২২ থেকে ২৪ ঘন্টা। সেই জায়গায় বসে এই চিন্তা করা, এটা অনেক বড় মনের পরিচয়। তখনকার দিনে মেয়েদের স্কুলে যাওয়া বারণ ছিল। মিশনারী স্কুলে কিছু প্রাথমিক শিক্ষা তিনি গ্রহন করেন। তারপর বেশিদিন স্কুলে যেতে পারেননি স্কুলে যাওয়া নিষিদ্ধ বলে। আর ঐ এলাকায় স্কুলও ছিল না। একটিই স্কুল ছিল, জিটি স্কুল-গিমা ডাঙ্গাঁ টুঙ্গিপাড়া স্কুল। যেটা তাদেরই পূর্ব-পুরুষের করা। তাদের বাড়ি থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার কাঁচা মাটির রাস্তা। কাঁচা মাটির রাস্তা দিয়ে যাও অথবা নৌকায় যাও মেয়েদের যাওয়া একদম নিষিদ্ধ। বাড়িতে পড়াশুনার জন্য পন্ডিত রাখা হত। মাষ্টার ছিল আরবি পড়ার জন্য। কিন্তু বঙ্গমাতার পড়াশুনার প্রতি অদম্য আগ্রহ ছিল। সে সময় বাবার সামনে ছেলের মৃত্যু হলে সেই ছেলের ছেলে মেয়েরা সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হত। তার দাদা তখন সিদ্ধান্ত নিয়ে তার দুই নাতনীকে আপন চাচাতো ভাইয়ের ছেলেদের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে যান এবং সমস্ত সম্পত্তি দুই নাতনীর নামে লিখে তার দাদাকে মাতোয়ালি করেন। এর কিছুদিন পর তার মা মারা যান। সেই থেকে বঙ্গমাতা মানুষ হয়েছেন বঙ্গবন্ধুর মায়ের কাছে। পাশাপাশি একই বাড়ি, একই উঠোন। কাজেই বঙ্গবন্ধুর মা নিয়ে আসেন বঙ্গমাতাকে। ছোট বয়সে বিয়ে হয়ে যায়, শ্বশুর-শাশুড়ি, দেবর-ননদের সঙ্গেই তিনি বেড়ে ওঠেন। তার বাবা রাজনীতি করতেন। সেই কলকাতা শহরে পড়াশুনা করতেন তখনি। মানবতার জন্য তার যে কাজ এবং কাজ করার যে আকাংখা যার জন্য জীবনে অনেক ঝুঁকি তিনি নিয়েছেন। সেই ১৯৪৭ এর রায়টের সময় মানুষকে সাহায্য করা, যখন দূর্ভিক্ষ হয় তখন মানুষকে সাহায্য করা, স্কুল জীবন থেকেই তার দাদা যে সম্পত্তি দিয়ে গেছেন। প্রচুর জমিজমা। জমিদার ছিলেন। সব সম্পত্তি মায়ের নামে। এর থেকে যে টাকা আসত তার শ্বশুড় তার হাতে দিতেন তিনি তা খরচ করতেন না।

একটার পর একটা ঘাত- প্রতিঘাত এসেছে। কিন্তু একটা জিনিস বলব বঙ্গমাতাকে কখনো ভেঙ্গে পড়তে দেখা যায়নি। যত কষ্টই হোক বঙ্গবন্ধুকে কখনো বলেননি যে, তুমি রাজনীতি ছেড়ে দাও বা চলে আসো বা সংসার করো বা সংসারের খরচ দাও। কখনও না। জীবনের কোন প্রয়োজনে বঙ্গবন্ধুকে কখনো বিরক্ত করেননি।

ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করল তিনি তো বাঁচার আকুতি করেননি। তিনি বলেছেন, ওনাকে যখন মেরে ফেলেছো আমাকেও মেরে ফেল। এভাবে নিজের জীবনটা তিনি দিয়ে গেছেন। সবাইকে নিয়ে চলে গেলেন।

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন যেন তাকে বেহেস্ত নসিব করেন।