বিজ্ঞাপন দিন

জলঢাকা সাবরেজিস্ট্রার অফিসে নানান অনিয়ম ॥ দলিল লেখক সমিতির নামে টাকা আদায়

ফরহাদ ইসলাম,জলঢাকা (নীলফামারী) প্রতিনিধিঃ নীলফামারীর জলঢাকায় সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে দলিল প্রতি অতিরিক্ত টাকা নেওয়াসহ নানান অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সাব-রেজিস্ট্রার ও দলিল লেখকদের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করেন ভূক্তভুগীগণ। অভিযোগে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে দলিল লেখক সমিতির কয়েকজন নেতাদের যোগসাজশে রশিদ ছাড়া দলিল প্রতি অতিরিক্ত টাকা আদায় ও দলিল রেজিস্ট্রির নীতিমালা না মেনে ভুয়া কাগজে জমি রেজিস্ট্রি,সামান্য ভুলে অতিরিক্ত অর্থ আদায়সহ চলছে বিভিন্ন কার্যক্রম। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জমি গৃহীতা ও দলিল লেখক জানায়, ব্যাংকের মাধ্যমে সরকারী ফি জমা দেবার পরেও আমাদের কাছ থেকে দলিল প্রতি অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে। যার কোন রশিদ কিংবা ভাউচার আমাদেরকে দেওয়া হয়না। 

এমনকি চাইলেও পাওয়া যায়না। উল্টো ওই নেতাদের প্রশ্নবানে জর্জরিত হতে হয়। সূত্রে জানা যায়, দলিল মূল্য ২৪ হাজার টাকার উপরে অতিরিক্ত ১৫’শ হতে দুই হাজার টাকা এবং এর নীচে দলিলমূল্যে ১২’শ থেকে ১৫’শ টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে অবসরপ্রাপ্ত এক প্রভাবশালী কর্মচারীর মাধ্যমে প্রতিদিন আদায় করা হচ্ছে। আর এই মোটা অংকের টাকা মাস শেষে সাব রেজিষ্টার ও দলিল লেখক সমিতির কয়েকজন নেতা ভাগ-বাটোয়ারা করে নেন। এতে কেউ প্রতিবাদ করলে জমি রেজিস্ট্রি তো দুরের কথা নিজেকে লাঞ্চিতের হাত হতে রক্ষা পাওয়া মুশকিল হয়ে যায়। এছাড়া কাগজপত্র সামান্য ভুল-ত্র“টি থাকলে দাতা-গৃহীতাদের গুনতে হয় অতিরিক্ত টাকা। জলঢাকা সাব-রেজিষ্টার অফিসের একাধিক সূত্র জানায়, দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আহম্মেদ হোসেন , সাধারন সম্পাদক মোস্তাফিজার রহমান ও আমজাদ হোসেন সরকারের নেতৃত্বে চলে সাব-রেজিস্ট্রার অফিস। তাদের মর্জি মতো রেজিস্ট্রারকে চলতে হয়। এমনকি জাল দলিল, খারিজ,পরচা ও জমির শ্রেনী পরিবর্তন করে সরকারের রাজস্ব ফাকিঁ দিয়ে দলিল সম্পাদন করলেও এতে সাব-রেজিস্ট্রার কোন আপত্তি তুলতে পাওে না। তুললে তাকে প্রত্যাহার কিংবা বদলীর দাবি তোলা হয়। 

এমন একাধিক নজির আছে। এরা এতই ক্ষমতাধর এদের বিরুদ্ধে কথা বলা মুশকিল। ফলে তারা দীর্ঘদিন ধরে সাব-রেজিস্ট্রার অফিসটি কুক্ষিগত করে রেখেছে। টাকা আদায়কারী অবসরপ্রাপ্ত ওই কর্মচারী মোজাম্মেল হোসেন বলেন, ‘দলিল প্রতি অতিরিক্ত টাকার অংশ সাব-রেজিস্ট্রারসহ দলিল লেখক সমিতির মাঝে ভাগ-বাটোয়ারা হয়।’ জলঢাকা সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আহম্মেদ হোসেন ভেন্ডার অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয় স্বীকার করে বলেন,‘পাটির কাছ থেকে আমরা খুশী করে টাকা নিয়ে থাকি। কিছু টাকা মসজিদ-মাদ্রাসা এবং যারা ওখানে পরিশ্রম করে তাদের জন্য নেওয়া হয়।’ অতিরিক্ত টাকা আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে সাব-রেজিস্ট্রার মনিষা রায় বলেন, ‘দলিল প্রতি সামান্য যে টাকা আদায় করা হয় তা দিয়ে অফিসের কাগজ-কলমসহ ষ্টেশনারী দ্রব্যাদি কেনা হয়।’