বিজ্ঞাপন দিন

জলঢাকায় দীর্ঘ ৫ বছর পর প্রাথমিক স্কুল পরিচালনা কমিটির তফসিল ঘোষনা

ফরহাদ ইসলাম,জলঢাকা (নীলফামারী) প্রতিনিধিঃ নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার দুইশ’৪৫টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির নির্বচনের তফসিল অবশেষে দীর্ঘ ৫ পাঁচ বছর পর ঘোষনা করেছেন। আগামী পহেলা অক্টোবর থেকে ৩১ শে ডিসেম্বর পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে ভোট গ্রহনের তারিখ নির্ধারন করেছেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। গত ৫ সেপ্টম্বর রবিবার স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা নোটিশ আকারে নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা করেছেন। 

এ দিকে দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে এডহক কমিটি দিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলো চলার ফলে এবং পরিচালনা পর্ষদের স্থানীয় জনগনের অংশীদারীত্ব না থাকায় বিভিন্ন অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, শিক্ষকদের পাঠদানে নিস্কিয়তা ও স্বেচ্ছাচারিতায় বিদ্যালয়গুলোর লেজে-গোবরে অবস্থা। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের পরিপত্র অনুযায়ী প্রতিটি বিদ্যালয়ে ১১ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদে থাকবে একজন সভাপতি, প্রধান শিক্ষক সদস্য সচীব, একজন শিক্ষক প্রতিনিধি, একজন দাতা সদস্য, দুইজন বিদ্যুৎসাহী, চারজন অভিভাবক সদস্য ও সংশিষ্ট ওয়ার্ডের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত এ কমিটি বিদ্যালয়ে স্বার্থ সংরক্ষন, শতভাগ উপস্থিতি-মান সম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করণ, দুর্নীতিমুক্ত থেকে সরকারী বরাদ্ধের অর্থ ব্যয় করার দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করবেন। কিন্তু ২০১৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত জলঢাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে নেই নির্বাচিত কমিটি। 

এতে বিদ্যালয়গুলো বিভিন্ন অব্যস্থাপনা ও অনিয়মে পরিনত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জলঢাকার দুইশ’৪৫টি বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সুশৃঙ্খলভাবে পাঠদান, মান সম্মত শিক্ষা, শতভাগ উপস্থিতি নিশ্চতকরণ ও নিয়মিত বিদ্যালয় পরিদর্শন করতে মাঠ পর্যায়ে আটটি ক্লাষ্টারে কর্মরত রয়েছেন আটজন সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। এ কমিটিতে সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন তারা। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে প্রধান শিক্ষকগন নিজ দায়িত্ব পালনে হয়ে পড়েছেন অনেকটাই উদাসীন। বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে নিজ খেয়াল খুশিমত ব্যক্তিগত কাজে সময় ব্যয় করছেন তারা। প্রায় প্রতিদিনে কাজে অকাজে উপজেলা শিক্ষা অফিসে ধড়না দিচ্ছে বিভিন্ন তদবিড়ের আশায় মাঠ ঘুরে এমন অভিযোগ করছেন অভিভাবকসহ স্থানীয়রা। পাশাপাশি সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাগন তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে হচ্ছে ব্যর্থ। বিদ্যালয়গুলোতে সরকারীভাবে বিভিন্ন বরাদ্দের উপর করছে তারা খবরদাড়ি। কৈমারী ইউনিয়নের দীঘিরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল কাদের বলেন,‘‘নির্বাচনের তফসিল হাতে পেয়েছি নির্বাচনের মাধ্যেমে স্কুলের পরিচালনা কমিটি আসবে। 

তিনি আরও বলেন, এডহক কমিটি দিয়ে স্কুলে কোনও অনিয়ম হয়নি।’’ উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা হারুন-অর রশিদ বলেন,‘‘স্কুল পরিচালনা কমিটির হাতে স্কুল পরিচালিত হবে এটি একটি নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। পরিচালনা কমিটি গঠিত হোক এটি আমরা আগেও চেয়েছি এখনও চাই। তিনি আরও জানান,্এই অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমাদের মাঠ পর্যায়ে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়েছে। অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,এসব ভিত্তিহীন।’’ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির নির্বাচনের তফসিল ঘোষনার বিষয়টি স্বীকার করেন, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ। অনিয়ম প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন অফিসে আসেন। শিক্ষা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহেদ বাহাদুর বলেন, শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে আমি দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর থেকে বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। অযথাচিত কারো হস্তক্ষেপ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কাম্য নয়। তিনি আরো জানান বিছিন্ন ভাবে অনিয়মের কিছু অভিযোগ আমি পেয়েছি। ইতিমধ্যেই প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে লিখিত ভাবে তা জানতে চেয়েছি। শিক্ষার গুনগত মান রক্ষায় আমরা শিক্ষা কমিটি একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিদ্যুৎসাহীদের অবশ্যই শিক্ষা গত যোগ্যতা থাকতে হবে।