বিজ্ঞাপন দিন

সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ভাতার টাকা বিতরণ রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ইকরচালী শাখার

সিরাজুল ইসলাম বিজয়, তারাগঞ্জ(রংপুর)প্রতিনিধিঃ করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি ঠেকাতে রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ইকরচালী শাখায় সামাজিক দূরত্ব মেনে ভাতার টাকা বিতরণ করছেন। গত মঙ্গলবার থেকে ইকরচালী উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে এ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। ব্যাংকের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সচেতন মানুষ ও ভাতাভোগীরা।

ভাতা তুলতে আসা প্রামানিকপাড়া গ্রামের ষাটোর্ধ্ব জোনাব আলী বলেন, ‘এবার টাকা তুলতে কোনো কষ্ট হয় নাই। ঠেলাঠেলিও নাই। তিন হাত পরপর হামরা স্কুলের মাঠোত লাইন ধরি বসি আছনো। ব্যাংকের লোক এক এক করি ডাকে হামাক টাকা দেইল। এই দুুর্দিনোত টাকা কোনা খুব কামোত নাগবে।’

ওই ব্যাংকের শাখা সূত্রে জানা গেছে, ইকরচালী ও হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়নের দুই হাজার ৯৯১জন তিন মাস পরপর বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধি ভাতার টাকা তুলতে আসেন। ভাতা তুলতে আসা বয়স্কদের করোনা সংক্রমণের অধিক ঝুঁকিতে আছেন। এ ছাড়া তাঁদের ব্যাংকের কাউন্টারে লাইনে দাঁড় করিয়ে টাকা দিতে হলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাও অসম্ভব। কারণ, ব্যাংকের ভেতর এত জায়গা নেই। এ কারণে ওই ব্যাংকের ব্যবস্থাপক ইকরচালী উচ্চবিদ্যালয় মাঠে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে ভাতার টাকা বিতরণের  উদ্যোগ নেন।

গতকাল সকাল ১০টায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ওই বিদ্যালয়ের মাঠে বাঁশের খুটিতে রশি বেধে সারি করা হয়েছে। তিন ফুট পরপর সাদা রং দিয়ে বৃত্ত করে দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক বৃত্তের ভেতর মুখে মাস্ক দিয়ে একজন করে ভাতাভোগী বসে আছে। হ্যান্ড মাইকে একজন করে ডেকে তাদের হাতে ভাতার টাকা তুলে দেওয়া হচ্ছে।

মেনানগর গ্রামের ফজলে হোসেন বলেন, ‘বাবা ঘরোত খাবার নাই। হাতোত ওষুধ কিনার টাকাও নাই। করোনার ভয়ে কষ্টে ঘরোত আছনু। কিন্তু ব্যাংকের লোক মোক মাইকোত ডাকে আনি মাঠোত বসে টাকা দিয়া খুব উপকার করলে।’

ওই ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মো. মুরাদুন্নবী বলেন, ‘করোনার ঝুঁকি এড়াতে সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা পরামর্শ করে এই উদ্যোগ নিয়েছি। মাঠে ও ব্যাংকের আশেপাশে ছিটানো হয়েছে জীবাণুনাশক। প্রথম দিন ৪৫০জনকে ভাতার টাকা দেওয়া হয়েছে। এভাবে ভাতার টাকা বিতরণ অব্যাহত রাখার চেষ্টা করব।’