বিজ্ঞাপন দিন

প্রফেসর আহমেদ হোসেন।। শিক্ষক ও একজন অকপট মানুষ!



-----------
--------
প্রফেসর আহমেদ হোসেন।নীলফামারীর জলঢাকার এক সম্ভ্রান্ত কৃষক পরিবারে জন্ম।পিতা মোঃ পানিয়াল মাহমুদের একমাত্র পুত্র।বড় আদরের সন্তান ছিলেন!
দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা দিয়ে পেশাজীবনের শুরু।দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসাবে দ্বায়িত্ব পালন করে পেশা জীবনের ইতি টানেন।
ব্যক্তিগত ভাবে যারা এই মানুষটিকে চিনতেন,তাদেরকে এক বাক্যে স্বীকার করে নিতে হবে যে,তিনি আগা-গোড়া একজন অকপট মানুষ।
তিনি যা বিশ্বাস করতেন,তাই বলতেন এবং মানতেন।
আমাদের সমাজের এত এত দ্বৈত নীতির মানুষের ভীরে,এমন একজন অকপট মানুষ পাওয়া আজকের দিনে একটি বিরল বিষয়!
বর্তমান সমাজে আমরা কী দেখি? কী দেখতে পাই?সচরাচর আমরা যা দেখছি-- মানুষের বাহিরে এক রূপ আর ভিতরে অন্য রূপ!
কিন্তু ক্ষণজন্মা এই মানুষটির মধ্যে কোন প্রকার কপটতার লেশ মাত্র ছিল না।
শিক্ষকতা জীবনে তিনি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে কোন প্রকার ভেদ রেখা টানেননি।তাই তো শিক্ষার্থীদের মাঝে তিনি অসম্ভব রকমের জনপ্রিয় ছিলেন।
সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও ছিল তাঁর অবাধ বিচরণ।এক সময় তিনি নিজে অভিনয়ের সাথে যুক্ত ছিলেন।সে কারনে হয়তো পরর্বতীতে সাংস্কৃতিক চর্চার ক্ষেত্রে বিভিন্ন সময়ে অকাতরে পৃষ্ঠপোষকতা করতেন।
যদিও বাম ঘরনার রাজনীতি দিয়ে জীবনের শুরু।তবে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাস্তবায়নে কোথাও তিনি তিল পরিমাণ ছাড় দেননি।কোথাও আপোষ করেননি।স্খলিত কিংবা বিচ্যুত হননি মুজিবীয় দর্শন থেকে।
নিরহংকারী এই মানুষটি গণ মানুষের সাথে মিশে যেতে পারতেন খুব সহজে।পরিপাটি পোষাকের আড়ালে, হাস্যোজ্জল ব্যক্তিত্বের মাঝে তিনি সবসময় একটা সারল্য ধরে রাখতেন।
নির্দ্বিধায় তিনি আঞ্চলিক ভাষার ব্যবহার করতেন এবং মানুষকে আকর্ষণ করতেন।তাঁর উচ্চারিত,উদ্বাত্ত আহ্বানে নূরুল দ্বীনের মত সম্মোহনী শক্তি ছিলো,"জাগো বাহে কোন্ঠে সগায়...?"
আহমেদ হোসেন স্যারের অবারিত স্বাধীনতায়, এলাকার কত চাকুরী প্রত্যাশিত যুবকের কর্ম ঘন্টা বেঁচে যেত,সেই ইতিহাসের কোন শেষ নেই।
প্রকৃতির অমোঘ নিয়মে সকলকেই তো যেতে হবে।যেতে হয়।তবে স্যারের কিছু কাজ---অসমাপ্তই রয়ে গেল!
বর্তমান সময়ে সাম্প্রদায়িকতার এই আস্ফালনে এমন সত্যিকারের একজন অসাম্প্রদায়িক চেতনার মানুষের আরও কিছু কাল এই সমাজের প্রয়োজন ছিল!
অকপট ও সারল্যে পরিপূর্ণ এই মানুষটির মহাপ্রয়াণে----
হে শিক্ষাবিদ,
হে সংগ্রামী কমরেড,
আপনাকে--- লাল সালাম।
পরপারের অবারিত শান্তির হিমশীতল বাতাস,আপনার রূহের রন্ধ্রে রন্ধ্রে বেয়ে যাক।
আপনার রূহের মাগফেরাত কামনা করি।
----------
----
২৪;১১;২০২০

Post a Comment

0 Comments