বিজ্ঞাপন দিন

সারাদিন মাঠে ধান কুড়িয়ে দিন শেষে বাড়ি ফেরেন অন্তেশ্বরী



আবেদ আলী স্টাফ রিপোর্টারঃ নীলফামারীর জলঢাকায় ধান কাটামাড়াইয়ের মৌসুম এলেই মাঠে মাঠে দেখা মিলে হতদরিদ্র পরিবারের ধানের শীষ কুড়ানিদের। তারা প্রতিদিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত ধানের শীষ কুড়িয়ে দিন শেষে বাড়ি ফিরেন। সারাদিন ধান কুড়িয়ে ৫ হতে ৭ কেজি পর্যন্ত ধান সংগ্রহ করতে পারেন ধান কুড়ানিরা। সোমবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে সংবাদ সংগ্রহ শেষে ফেরার সময় উপজেলার খুটামারা এলাকায় এমন চিত্র দেখে কথা হয় বগুলাগাড়ী গ্রামের এক অভাবি পরিবারের ৬৫ বছর বয়সী ধানের শীষ কুড়ানি অন্তেশ্বরীর সাথে। তিনি জানান, হামার কোনো জমিজমা নাই, তিন শতক মাটিত বাড়ি করে আছি। মানুষের কাজকাম করে কোনোরকম দিন যায়। ধানের সময় এলেই ধান কুড়াই, এখন ধান কাটামাড়াই চলছে সারাদিন দোলাত ঘুরে ঘুরে মাটিতে পড়া ধান ও ধানের শীষ কুড়িয়ে কোনোদিন ৫ থেকে ৭ কেজি পর্যন্ত পাওয়া যায়। এই ধানের মৌসুমে ধানের শীষ কুড়িয়ে ৫/৬ মণ ধান ঘরে ওঠার কথাও জানায় অন্তেশ্বরী। পার্শ্ববর্তী এলাকার ধান কুড়ানি কিশোর হাবিবুর, জয়নাল কৃষ্ণ ও রণজিৎ জানায়, আমরা মাঝে-মধ্যে ইঁদুরের গর্ত থেকে ধান বের করে কয়েকদিন পর যা জমা হয়, তা রোধে শুকানোর পর বাজারে বিক্রি করি। শৌলমারীর দোলায় ধান কুড়ানি দলের রমানাথ ও মানিক বলেছে ইঁদুরের গর্ত খুঁড়তে গেলে ভয় লাগে। অনেক সময় বড় বড় ইঁদুর বের হয়ে আসে। মাঝে মাঝে গর্তে সাপও দেখা যায়। বাড়িতে যখন খুব অভাব থাকে তখন কুড়ানি ধান দিয়ে চাল বানিয়ে ভাত খাই। ওই এলাকার কৃষক আব্দুল জলিল (৫৫) জানায়, আমন ধানের মৌসুমে ধান কেটে শুখানোর জন্য জমিতে কিছুদিন ধান ফেলে রাখতে হয়। এরপর ধান তুলে বাড়িতে নেওয়ার সময় কিছু ধান মাটিতে পড়ে যায় এবং গ্রামের অনেক ভূমিহীন দরিদ্র পরিবারের নারী ও শিশুরা মাটিতে পড়া সেসব ধান সংগ্রহ করে থাকেন। এতে ধানের মৌসুমে গ্রামের ভূমিহীন পরিবারেও দেখা যায় ২/৪ মণ ধান রয়েছে। মাটিতে পড়ে থাকা ধান কুড়ানোর পাশাপাশি জমিতে ইঁদুরের গর্তও খুড়ে ধান সংগ্রহ করে থাকে ধান কুড়ানিরা। ইঁদুর বিভিন্ন সময় জমির ধান কেটে নিয়ে গর্তে জমা করে রাখে। এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহেদ বাহাদুর এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, এই আমন মৌসুমে কুড়ানি ধানে গ্রামের অনেক দরিদ্র পরিবার আছেন তারা কিছুটা হলেও তাদের অভাব মেটানোর সুযোগ পায়।

Post a Comment

0 Comments