বিজ্ঞাপন দিন

৩ বার গ্রেফতারী পরোয়ানা জারীর পরও আসামী ঘুরে বেড়াচ্ছে প্রকশ্যে

সুমন মূখাজী নীলফামারী প্রতিনিধিঃ বার বার গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী হলেও ক্ষমতা আর টাকার জোরে গ্রেফতার হচ্ছেন না কাজী ময়নুল ইসলাম। তবে এতদিন বিষয়টি নিয়ে কোন নারাচাড়া না হওয়ায় রেহাই পেয়ে যান তিনি, কিন্তু এবারে অনেকটা বেকায়দায় পড়েছেন বলে জানায় তাঁর একটি ঘনিষ্ট সূত্র। তবে আদালতের নির্দেশ পুলিশ প্রশাসন বার বারই অমান্য করে নানান কৌশলের আশ্রয় নিয়ে সহযোগিতা করে চলেছেন আদালতের ওয়ানটেড কাজী ময়নুলকে, এমন অভিযোগ উঠেছে এলাকাবাসির পক্ষ থেকে। অভিযোগ মতে, কাজী ময়নুল কেবল সাধারণ মানুষকে ঠকিয়ে টাকা হাতিয়ে ক্ষান্ত হননি সরকারী ব্যাংক থেকেও হাতিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। সেখানেও আশ্রয় নিয়েছেন কৌশলের। ব্যবসার নামে টাকা ঋণ নিয়ে আর ফেরৎ দেননি। টাকা আদায়ের জন্য ব্যাংক কর্তৃপক্ষ.আশ্রয় নিয়েছেন আইনের। নানান কৌশল করে দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে এদিক-ওদিক করে টাকা দেয়া থেকে বিরত থেকেছেন তিনি। আত্মরক্ষার জন্য সর্বোচ্চ সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গিয়েও শেষ রক্ষা করতে পারেননি। এখন আবার ওই মামলা চলে এসেছে নীলফামারী জেলা যুগ্ম জজ আদালতে। টাকা পরিশোধ না করায় ৩ বছর আগে সর্বশেষ গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী হয় কাজী ময়নুলসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে। এর আগে ২০০৪ সালের ৬ এপ্রিল ৩৩নং আদেশে গ্রেফতারের আদেশ জারী হয়। অভিযোগ মতে, ওই আদেশ পুলিশ কার্যকর করেননি প্রায় ২ বছর। এ সময়ের পর কাজী ময়নুল ওই আদেশের বিরুদ্ধে মহামান্য হাইকোর্টে ২০০৬ সালে রিট পিটিশন করেন (নং ৭৬৯৫/০৬)। পরবর্তীতে মহামান্য হাইকোর্ট রিট বাতিল করে দিলে নীলফামারী যুগ্ম জজ আদালত থেকে আবারও ৪৬নং আদেশে কাজী ময়নুলকে গ্রেফতারের আদেশ দেন। একইভাবে দ্বিতীয় বারের মত পুলিশ একই কায়দায় কাজী ময়নুলকে গ্রেফতার করেননি। এরপর কিছুদিন পর আবারও মহামান্য সুপ্রিম কোর্টে লিফ টু আপিল করেন কাজী ময়নুল। আবারও ৬৭নং আদেশে স্থগিত হয়ে যায় গ্রেফতারের ওই আদেশ। কিন্তু ওই লিফটু আপিলের কোন মেরিট না থাকায় ২০০৭ সালের ৩ মার্চ মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট তা ভ্যাকেট করে দেন। মামলা চলে আসে আবারও নীলফামারী আদালতে এবং.নীলফামারী জেলা যুগ্ম জজ আদালত.২০১৩ সালের ২৮ অক্টোবর তৃতীয় বারের মত কাজী ময়নুলসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করেন। ওই মামলা সৈয়দপুর সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ দায়ের করেন ২০০৩ সালে এবং মামলা নং হচ্ছে ১০১। মামলাটি করা হয় ৪৪ লাখ ৮০ হাজার ৫৭৬ টাকার ৮০ পয়সা আদায়ের জন্য। মামলার অন্যান্য আসামীরা হচ্ছেন কাজী ময়নুলের পরিবারের আরও ২ জন সদস্য ও সদস্যা এবং আরেকজন আত্মীয়। তাদের নামেও রয়েছে গ্রেফতারী পরোয়ানা। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে আদালত থেকে বার বার গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী হলেও সৈয়দপুর থানায় পুলিশ তা বাস্তবায়ন করছেন না। পুলিশের পক্ষে বলা হচ্ছে আসামীদের পাওয়া যাচ্ছে না। তবে অভিযোগ আছে, পুলিশকে ম্যানেজ করে গ্রেফতার থেকে বেঁচে যাচ্ছেন আসামীরা। অভিযোগ আছে, আসামী ঘুরে বেড়াচ্ছেন প্রকাশ্যে। এ ব্যাপারে সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম জানান, আসামী কাজী ময়নুলকে পাওয়া যাচ্ছেনা, তিনি পলাতক রয়েছেন। তবে নারী আসামীসহ বাকি ৩জন কোথায়, জানতে চাইলে ওই পুলিশ কর্মকর্তা তেমন কোন সদুত্তোর দিতে ব্যর্থ হন। অবশ্য তিনি দাবি করেন, তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। উল্লেখ্য, আদালতের এসব নির্দেশ বছরের পর বছর কেন কার্যকরী না হওয়ায় থানা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।