বিজ্ঞাপন দিন

নীলফামারীর অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থ ৫৫ পরিবারের লোকজন দুর্বিসহ জীবন কাটাচ্ছে

আব্দুল মালেক, নীলফামারী প্রতিনিধিঃ নীলফামারী সদর উপজেলার গোড়গ্রাম ইউনিয়নের বানিয়াপাড়ায় শুক্রবার রাতে এক ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে পুড়ে গেছে ৫৫টি পরিবারের দেড়শ’ ঘর। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো শুক্রবার রাতভর কাটিয়েছে নিজ ভিটায় খোলা আকাশের নীচে ঘন কুয়াশা ও শীতের মাঝে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ ও ব্যক্তি উদ্যোগে গত রাতে ও শনিবার কম্বল, শাড়ি, লুঙ্গি ও খাবারের ব্যবস্থা করা হলেও হয়নি তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই। আজ শনিবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, আগুনে পুড়ে যাওয়া সর্বস্বহারা পরিবারগুলোর পোড়া ভিটায় বসে আহাজারী করছে। শুক্রবার তাদের রাত কেটেছে খোলা আকাশের নীচে। প্রচন্ড ঘন কুয়াশা ও শীতে ছিল না মাথা গোঁজার ঠাঁই। দেখা গেছে মাত্র দু’তিনটি ভিটায় তাবু টানানো হয়েছে। স্বর্ণকার ধরনী কান্তর ছেলে নরেশ চন্দ্রের বাড়ি থেকে আগুনের সুত্রপাত হওয়ার কথা জানা গেছে। তবে, কীভাবে আগুন লেগেছে তা জানা যায়নি। ঘন বসতি হওয়ার কারনে আগুন দ্রুত চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। পাড়ার লোকজন আগুন নেভানোর প্রাণপন চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। খবর পেয়ে ডোমার ও নীলফামারী দমকল বাহিনীর ৩টি ইউনিট তিন-চার ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে। ততক্ষণে পাড়ার ৫৫টি পরিবারের সব কিছুই পুড়ে ছাই হয়ে যায়। কেউ ঘর থেকে এক দানা ধান-চালও বের করতে পারেনি। আগুনে পুড়ে সর্বস্বহারা মৃনাল চন্দ্র রায় বলেন, আগুনে আমাদের সব কিছু পুড়ে ছাই করে দিয়েছে। ঘরে থাকা ধান, চাল, টাকা, সোনাদানা সবই গেছে। রাত কেটেছে খোলা আকাশের নীচে। এখন শুন্য ভিটায় ঘর তুলবো তার কোন ব্যবস্থা নেই। সরকারিভাবে যদি ঘর তোলার সাহায্য না পাই তাহলে এভাবেই খোলা আকাশের নীচে থাকতে হবে। খাদ্য ও গরম কাপড় যা ছিল তা পুড়ে গেছে। শীতে ছেলে-মেয়ে নিয়ে শীত কীভাবে কাটবে তা আমরা জানিনা। গোড়গ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রেয়াজুল ইসলাম জানান, ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে শুক্রবার রাত থেকে তাদের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ব্যক্তি উদ্যোগে কম্বল, শাড়ি ও লুঙ্গীও দেয়া হয়েছে। তবে, ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোর ঘর তোলার কোন ব্যবস্থা নেই। তাদের ঘরবাড়ির পাশাপাশি ধান, চাল, আসবাবপত্র, টাকা, সোনারুপা সব পুড়ে গেছে। নীলফামারী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ বেলায়েত হোসেন বলেন, শুক্রবার রাতেই কিছু ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে। আজ শনিবার পরিবার প্রতি ৩কেজি করে চাল ও দু’হাজার করে টাকা দেয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নুরের সাথে পরামর্শ করে গৃহ নির্মাণ মঞ্জুরীসহ অন্যান্য উপকরণ দেয়া হবে।