বিজ্ঞাপন দিন

জলঢাকায় অপহৃতা এসএসসি পরীক্ষার্থীকে উদ্ধারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

ভ্রাম্যমান সংবাদদতা : জলঢাকায় উম্মে সালামা নামের এক এসএসসি পরীক্ষার্থী দ্বিতীয় দফায় অপহরনের শিকার হয়েছে । প্রথম দফায় অপহরণের ৫দিন পর উদ্ধার হলেও দ্বিতীয় দফায় অপহরণের ২০ দিন অতিবাহিত হলে তার কোন সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। এ অবস্থায় মেয়েকে উদ্ধারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা। অপহৃতা উম্মে সালমা জলঢাকা উপজেলার মীরগঞ্জ ইউনিয়নের পুর্ব শিমুলবাড়ি গ্রামের ফজলুল হকের একমাত্র মেয়ে। গত ৭ ডিসেম্বর বুধবার দুপুরে সালমার বাড়ির উঠানে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন-অপহৃতা সালমার বাবা ফজলুল হক, মা রুজিনা বেগম, বড় আব্বা (জ্যাঠা) মোজাম্মেল হক, নানা রজিয়ার রহমান, নানী আঞ্জুয়ারা বেগমসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। সংবাদ সম্মেলনে অপহরণের শিকার উম্মে সালমার বাবা ফজলুল হক লিখিত অভিযোগ করে বলেন, উম্মে সালমা মীরগঞ্জহাট দ্বি-মূখী উচ্চ বিদ্যালয় হতে এবার এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার জন্য ফরম পূরণ করেছে। গত ২৬ সেপ্টেম্বর সন্ধায় নানার বাড়ির খুটামারা ইউনিয়নের পশ্চিম খুটামারা গ্রাম থেকে প্রতিবেশি পুর্ব শিমুলবাড়ি গ্রামের আলাজ উদ্দিনের ছেলে আনছারুল হক, তার খালাতো ভাই বাবু ও হাচানের সহযোগিতায় উম্মে সালমাকে জোড়পূর্বক মোটরসাইকেলে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ২৭ সেপ্টেম্বর/১৬ জলঢাকা থানায় অভিযোগ দাখিল করতে গেলে থানা পুলিশ সে সময় মামলাটি নথিভুক্ত না করে তদন্ত করবেন বলে লিখিত অভিযোগটি রেখে দেয়। এর পর ১ অক্টোবর অপহরণকারীরা মীরগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির হুকুম আলীর বাড়িতে উম্মে সালমাকে দিয়ে যায়। ওই তারিখে থানা পুলিশ আমার দেয়া অভিযোগটি রেকর্ড করেন। রাতে চেয়ারম্যান সাহেব সালমাকে জলঢাকা থানায় হাজির করলে পরদিন আদালতের মাধ্যমে সালমাকে আমার জিম্মায় নেই। অপহৃতা উম্মে সালমার বাবা বলেন-মেয়েকে বাড়ি এসে সাবধানে রাখা হতো। এ অবস্থায় গত ১০ নভেম্বর মীরগঞ্জহাট দ্বি-মূখী উচ্চ বিদ্যালয়ে সালমার এসএসসি পরীক্ষার ফরম পুরণ করা হয়। এর পর অপহরণকারীদের ভয়ে মেয়েকে জলঢাকা পৌর এলাকার রাজারহাট এলাকায় তার মামার বাড়িতে পাঠাই। কিন্ত, সেখান থেকে গত ২৮ নভেম্বর সালমা মামার নিজস্ব স্টুডিও থেকে ছবি তুলে নানার বাড়ী আসার পথে আনছারুল ইসলাম আবারও মাইক্রোবাস যোগে অপহরণ করে নিয়ে যায় তার মেয়েকে। অপহৃত সালমার নানা রজিয়ার রহমান বলেন, গত ২৮ নভেম্বর সালমা আবারও অপহরণের শিকার হলে, পরদিন ১৯ নভেম্বর সকাল ১১টার দিকে আমরা জলঢাকা থানায় গিয়ে অভিযোগ করলে, থানার ওসি মোস্তাফিজার রহমান আমাদের সঙ্গে অসদাচরণ করেন। তিনি বলেন আমি কি বারবার মামলা নিব? অবশেষে, সেখান থেকে ফিরে সালমার বাবা ফজলুল হক বাদি হয়ে, ২১ নভেম্বর/১৬ নীলফামারী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে ৫ জনকে আসামী করে একটি মামলা করেন। আদালত তদন্ত পুর্বক ৬০দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন জলঢাকা থানা পুলিশকে। এর পর আমরা থানায় যোগাযোগ করলে ওসি সাহেব বলেন, আদালত থেকে এখনও কোনো কাগজ আমি পাইনি। এ অবস্থায় মনে হচ্ছে পুলিশ পক্ষ অবলম্বন করছে। নিরুপায় হয়ে আমরা আজ মেয়ে উদ্ধার ও আসামী গ্রেফতারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করতে বাধ্য হয়েছি। সালমার মা রুজিয়া বেগম কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, আমি আমার নাবালিকা মেয়েকে ফেরৎ চাই, আপনারা (সাংবাদিক) আমার মেয়েকে উদ্ধার করার ব্যবস্থা করে দেন। এ ব্যাপারে জলঢাকা থানার ওসি মোস্তাফিজার রহমান বলেন, “অপহৃতা মেয়েটিকে উদ্ধার ও মামলার আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্ঠা অব্যাহত রয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে ওসি সাংবাদিকদের বলেন-তিনি উম্মে সালমার পরিবারের সদস্যদের সকল প্রকার সহযোগিতা করেছেন এখনও করছেন।”