বিজ্ঞাপন দিন

টুই-টুম্বর পানির শব্দ আর নেই! তিস্তা এখন ধবল বালুর সোনালি কিরণ। ২২.০১.২০১৭

মানিক লাল দত্ত, জলঢাকা (নীলফামারী): তিস্তা পাড়ের কলিমুদ্দিন একজন নৌকার কারীগর, নৌকা মেরামত করা যার প্রতিদিনের জীবিকা। কিন্তু তিস্তায় পানি কমে যাওয়ায় কর্মসংস্থান হারিয়েছে, বিশেষ করে পানির অভাবে প্রায় ১০ হাজার জেলের দূর্দিন চলছে। তিস্তার বাইশপুকুর এলাকার বৃদ্ধ আফিজ উদ্দিনের ছেলে কাচু মামুদ (২৫), হামিদুর রহমানের ছেলে হাফিজুর রহমান, বিশাধু মামুদের ছেলে বিষ্ণু (২৮) রোববার মিডিয়া কর্মীদের বলেন, কবে নাগাদ তিস্তায় পানি ভরাট হয়ে থৈই-থৈই করবে, দু’চোখ ভরে দেখবে তাদের জীবন, যাদের জীবন পানির উপর। তিস্তার বুকে পানি নেই, যেদিকে চোখ যায় শুধু বালু আর বালু, এরই মধ্যে চলমান মাঘের শৈত্য প্রবাহ কাহিল করে দিয়েছে এখানকার বসবাস কারীদের। নাস্তানাবুদ হয়ে পড়েছে এখানকার মানুষ, শীতবস্ত্রের অভাবে এই অঞ্চলের মানুষ অনেকটাই যবুথবু। সরকারী-বেসরকারী কোন সংস্থাই এখন পর্যন্ত চরবাসীর পাশে গিয়ে দাঁড়ায়নি। কয়েকদিন আগেও তিস্তা নদীতে প্রায় ২ হাজার ৫ শত কিউসেক পানি থাকলেও বর্তমানে ৪ শত কিউসেক রয়েছে। ফলে পানি শুকিয়ে তিস্তা হয়েছে মরুদ্যান, যেন ধবল বালুর সোনালী কিরণ। বোরো আবাদের মূখ্য সময়ে চিন্তিত সংশ্লিষ্টরা। চলতি মৌসুমে নদীর পানি হ্রাস পেয়েছে। বিগত ২০১৪ সালে বোরে মৌসুমে লালমনির হাট, নীলফামারী, রংপুর ও দিনাজপুর জেলার ৬৫ হাজার হেক্টরে সেচ সুবিধা প্রদানের লক্ষ্য মাত্রা ছিল। তবে সেচ দেওয়া হয় মাত্র ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে সেচের আওতায় আনা হয়েছে, লালমনির হাটের হাতীবান্ধা, নীলফামারীর সদর, ডিমলা, জলঢাকা ও কিশোরগঞ্জ উপজেলাকে। এ বিষয় তিস্তা ব্যারেজ সেচ প্রকল্পের সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রাফিউল বারী সাংবাদিকদের বলেন, শুষ্ক মৌসুমে নদীর পানি কমবে-বাড়বে তা স্বাভাবিক ! নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ধরে রাখতে সেচ প্রকল্পের জন্য ১০ হাজার কিউসেক পানির প্রয়োজন, এখন পানি পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৪ শত কিউসেক। নীলফামারী জেলা রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি মানিক লাল দত্ত এবং জলঢাকা হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক উৎপল ভট্টাচার্য বলেন, তিস্তা নদীর পানি বন্টন চুক্তি দীর্ঘদিন ধরে থমকে রয়েছে, বিষয়টি দ্রুত সমাধানের প্রয়োজন।