বিজ্ঞাপন দিন

জলঢাকায় উৎপাদিত আমন ধানের কৃষকের বাধ ভাঙ্গা কাঁন্না!

মোঃ ছানোয়ার হোসেন বাদশা জলঢাকা (নীলফামারী) প্রতিনিধি: নীলফামারী জলঢাকায় উৎপাদিত আমন ধান নিয়ে শুরু হয়েছে বাধ ভাঙ্গা কাঁন্না। যেটুকু পুজি দিয়ে গৃহস্থ কৃষককুল আমন ধানে ব্যয় করেছে তা এখন মানুষের খাদ্যের বদলে গো খাদ্যে পরিণত হয়েছে। হতাশার গহব্বরে কৃষিতে এ ধরণের বড় মার খাওয়ায় চাষীরা হতশার বিহব্বলে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। পাতা মরা রোগ আর নিন্ম চাপের কারণে আবহাওয়া প্রতিকুলে না থাকায় সৃষ্টি হয়েছে এক বড় ধরণের মানবিক বিপর্যায়। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের খবর এখন পর্যন্ত রাখেনি স্থানীয় কৃষি অফিস। উৎপাদিত ফসলে কৃৃষকদের যা পরামর্শ পাওয়ার কথা ছিল তা না পাওয়ার ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগেও মোকাবেলা করতে পারেনি এলাকার কৃষক। উপজেলার কয়েকটি এলাকা পরিদর্শনে গেলে কৃষকরা এমন তথ্য জানিয়েছে। অপর দিকে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, এবারের আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছিল ২৩ হাজার হেক্টর। এর বিপরীতে অর্জিত হয়েছে ২২ হাজার ২ শত ৯৫ হাজার হেক্টর। তবে কৃষক কুলের দাবী কৃষি অফিসের বেঁধে দেওয়া নির্ধারিত চাষাবাদের মধ্যে প্রায় বেশির ভাগ ফসলেই কৃষক ঘরে তুলতে পারবে না। 

উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের কৃষক দ্বীনবন্ধু রায় জানান, এক দিকে পাতা মরা পোঁকা, অন্যদিকে আবহাওয়া জনিত কারনে ধান গাছ নুইয়ে পড়ছে মাটিতে। এ জন্য ধান গাছে আর ধান নেই। এতে করে সব ধান পাতানে পরিনত হয়েছে। কৈমারী ইউনিয়নের কৃষক মনোরঞ্জন রায় ও আলতাব হোসেন জানান, অন্যের দুই বিঘা জমি বর্গা নিয়ে এবং দাদন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ধার দেনা করে এবারের আমন ধান চাষাবাদ করেছিলাম। এখন ধানের যে পরিস্থিতি তাতে পথে বসার উপক্রম। উপজেলার গোলনা ইউনিয়নের শালনগ্রাম ২ নং ওয়ার্ডের কৃষক নির্মল চন্দ্র রায় ও নুর-নবী জানান দাদন ব্যবসায়ীর অর্থে ও অন্যের জমি বর্গা নিয়ে অতি লাভের আশায় এবারের আমন ধান চাষাবাদ করে ছিলাম, কিন্তূ দুর্ভাগ্য গুড়ের লাভ পিপঁড়ায় খাইলো। কালীগঞ্জ এলাকার কৃষক সুধা রাম রায় জানান, জমিতে যেভাবে আমন ধান উৎপাদিত হয়েছিল তাতে বিঘা প্রতি ১৬ থেকে ১৮ মন ধান অর্জিত হত। কিন্তূ বর্তমান ফসলের যে পরিস্থিতি তাতে ভাড়ি চিটা সহ ৫ থেকে ৬ মন ধান সংগ্রহ হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কৃষককুল এবার ফসলেই নাভিশ্বাস ফেলছেন। মিরগঞ্জ পাঠান পাড়া গ্রামের কৃষক রেজাউল করিম জানান, ৩ বিঘা জমিতে আমন ধান চাষাবাদ করেছি। গাছে ধান না থাকায় দের বিঘা জমির ফসল ব্যাপারীর কাছে বিক্রি করছি অতি স্বল্প দামে। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ শাহ্ মুহাম্মাদ মাহফুজুল হক জানান, সারাদেশে সাম্প্রতিক সময়ের নিম্ন চাপে কিছু ধান ক্ষেতের ধান গাছ নুইয়ে পড়েছে। আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি যে ধান গাছ গুলো কয়েকটি গোঁছা এক সঙ্গে বেঁধে দাঁর করিয়ে দিতে। পাশাপাশি জমির পানি যদি না থাকে বা পানি যদি নেমে যায় তাহলে ওই জমির ধানের কোন ক্ষতি হবে না। সেই সঙ্গে যে সমস্ত কৃষকের জমিতে এখনো রোগ বালাই ধরেনি তাদের আমরা বিভিন্ন প্রকার শু-পরামর্শ প্রদান করে আসছি, যাতে তারা সুফল পান।