রবিউল ইসলাম রাজ,জলঢাকা সংবাদদাতা :
নীলফামারীর জলঢাকায় ভয়াবহ অগ্নি কান্ডে ভস্মীভূত হলো আট পরিবারের ২৫টি ঘর। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে প্রায় ১৫ লাখ টাকা। সর্বোচ্চ হারিয়ে পথে বসেছে পরিবারের মানুষগুলো।তাদের আহাজারীতে আকাঁশ পাতাল ভারী হতে শুরু হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টায় পৌরসভা ৫নং ওয়ার্ড বারোঘড়ি পাড়া দক্ষিণ টাড়ি নামক স্থানে।
সরেজমিন ও প্রত্যক্ষদর্শীর মাধ্যমে জানা যায়,ওই গ্রামের লোকজন রাতের খাওয়া দাওয়া সেরে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিতে ছিলো খেটে খাওয়া দিনমজুর মানুষগুলো।অনেকে আবার ওই ঘুমিয়ে পড়ে ছিলো। হঠাৎ রাত সাড়ে নয়টায় মৃত নবদ্দী মামুদের ছেলে আজহারুল ইসলামের একটি ঘরে আগুন দাউ ধাউ করে জ্বলে উঠে। টের পেয়ে তার পরিবারের লোকজনসহ সকলে বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার শুরু করে।তাদে চিৎকারে গ্রামবাসী ছুটে আসতে থাকে। যে যেভাবে পারে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে এবং মুঠোফোনের মাধ্যমে রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে উপজেলা ফায়ার সার্ভিস এ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সে জানায়। তাৎক্ষনিক ফায়ার স্টেশন ইনচার্জ মোমতাজুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি ইউনিট দূরত্ব গতিতে ঘটনাস্থলে পৌছে আগুন থামানোর কার্যক্রম শুরু করে। গাড়ির স্টোক পানি ২০ মিনিট ঢালার পর আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রনে আসে।পানি শেষ হওয়ার সাথে সাথে পাশের ক্যানেলে পানি উত্তোলনের স্যালো মেশিন লাগানোর চেষ্টা করে ফায়ার ফাইটাররা। কিন্তু মেশিনটির ত্রুটি থাকার কারনে চালু করা সম্ভবপর হয়নি। এতে যেগুলো বাঁচানো সম্ভব হতো সেগুলো আর রক্ষা হয়নি। মহুর্তে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে আট পরিবারের ২৫টি ঘর,গরু,ছাগল,হাঁস,মুরগী ও আসবাবপত্রের সরঞ্জাম। তাতে ক্ষতির পরিমান দাঁড়ায় আনুমানিক ১৫ লক্ষাধীক টাকা। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো হলো,মৃত নবদ্দী মামুদের অপর দুই ছেলে আল আমিন ও আলমগীর হোসেন,মৃত নমীর উদ্দীনের ছেলে মিজানুর রহমান,মৃত কান্দুরা মামুদের ছেলে মজনু হোসেন,মৃত মফেল উদ্দীনের ছেলে রহিদুল ইসলাম,মৃত কহর উদ্দীনের ছেলে সিরাজুল ইসলাম ও মৃত নবদ্দী মামুদের স্ত্রী জেলেকা বানু (ভিক্ষুক)। ফায়ার সার্ভিসের পানি উত্তোলনের স্যালো মেশিন ত্রুটিতে এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে বলে,মেশিনটি ভালো থাকলে এক দুইটা বাড়িবাদে সবগুলো রক্ষা করা যেত বলে ধারনা করেন।এমন সংবাদ সর্বত্রে ছড়িয়ে গেলে সেখানে রাতেই জনতার ঢল নামে। ঘটনাটি শোনা মাত্র বসে ছিলেন না স্থানীয় এমপি,ইউএনও,ওসি ও কাউন্সিলররা। তারা জরুরী ত্রানের ব্যবস্থা করে দেন এবং পরিবেশ শান্ত করার চেষ্টা করেন। এসময় স্থানীয় কাউন্সিলর ফজলু ইসলাম ব্যবস্থা করেন শুকনা খাবারের। তিনি বলেন,পরিবার গুলোর দেখা শোনা করার দায়িত্ব আমি নিলাম। সবধারনের সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করে দিবো।
গ্রামের অনেকে বলেন,বিদ্যুৎ এর মিটার থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। তারা আরও বলেন,ফায়ার সার্ভিসের মেশিনের কারনে ক্ষতির পরিমান বেশী হয়েছে বলে ধারনা করেন। যার ফলে কোন কিছু রক্ষা পায়নি বলে এলাকার শত শত মানুষ অভিযোগ করে।
সার্ভিস স্টেশন ইনচার্জ মোমতাজুল ইসলাম জানায়,আমরা সঠিক সময়ে উপস্থিত হতে পেরেছি বলে আশে পাশের বাড়িগুলো আগুনের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। মেশিনটি সমস্যা করার কারনে আমি খুবেই মর্মাহত ও দুঃখ প্রকাশ করতেছি।
ঘটনার এক ঘন্টা পরে জেলা ফায়ার সার্ভিসের উপ সহকারী কোবাদ আলী সরকার উপস্থিত হয়ে পরিবেশের সব কিছু শান্ত করেন। এবং তিনি বলেন,আমাদের সদস্যবৃন্দ সর্বাত্মক চেষ্টা করেছে। মেশিনটি ভালো থাকলে হয়তো আরও কিছু রক্ষা যেতো।
জলঢাকা থানা অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজার রহমান বলেন,আমাদের কাছে খবর আসা মাত্র আমিসহ সঙ্গীয় ফোর্সের নিয়ে উপস্থিত হয়ে পরিবেশ শান্ত করি।এবং আমি সাহায্য সহযোগিতা ওখাবরের ব্যবস্থা করে করেছি।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুজাউদ্দৌলা বলেন,সংবাদ পাওয়া মাত্র ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সরকারীভাবে সাহায্য সহযোগিতা করেছি।