বিজ্ঞাপন দিন

ভুল করলে ক্ষমা করে দিও বাবা"- বনানীর অগ্নিকাণ্ডে বাবাকে ফোনে জলঢাকার রুমকী

মর্তুজা ইসলাম, জলঢাকা প্রতিনিধিঃ 'বাবা আমি হয়তো আর বাচবো না , আমার নিঃস্বাস বন্ধ হয়ে আসতেছে।খুব কষ্ট পাচ্ছি। আমি ভুল করলে আমাকে ক্ষমা করে দিও, আমার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করো সবাই' জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে বাবা আশরাফ হোসেনকে মোবাইল ফোনে কথাগুলো বলেছেন রুমকি। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বনানীর এফ আর টাওয়ারের অগ্নিকাণ্ডে আটকে যাওয়ার পর মৃত্যুর আগে বাবা-মাসহ নিকট আত্মীয়দের কাছে এভাবেই দোয়া চেয়ে নেন রুমকি। ঐ অগ্নিকান্ডে মারা গেছেন রুমকির স্বামী মাককসুদুর রহমানও। বহুতল ভবন থেকে লাফ দিয়ে প্রান বাচাতে গিয়ে তার মৃত্যু হয়। মাকসুদুর রহমানের দাফনকার্য সম্পন্ন হয়েছে নিজ বাড়ী পুরান ঢাকার ওয়াড়িতে। এদিকে শুক্রবার (২৯ মার্চ) দুপুর ১২ ঘটিকায় রুমকির মরদেহ এসে পৌছায় তার বাবার বাড়ি নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার বিন্নাকুড়ী গ্রামে। এসময় রুমকীকে শেষ দেখা দেখতে জড়ো হয় উপজেলার হাজার হাজার নারী-পুরুষ ও আত্বীয়-স্বজন। চোখের জলে বিদায় জানায় তারা রুমকীকে। ঐ গ্রামেই বাদ জুমা তার দাফনকার্য সম্পন্ন হয় । তিনভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট রুমকী।জলঢাকা বিন্নাকুড়ি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, জলঢাকা রাবেয়া কলেজ থেকে এইচএসসি, রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে অনার্স এবং ঢাকা ইডেন কলেজ থেকে স্নাকোত্তর সম্পন্ন করেন রুমকি। মাস্টার্সে পড়াকালীন হেরিটেজ ট্রাভেলস কোম্পানীতে চাকরি করছিলেন সে। এরই মধ্যে একই কোম্পানিতে চাকুরিরত ঢাকা গেণ্ডারিয়া থানার আলমগঞ্জ ইউনিয়নের মৃত. মিজানুর রহমানের ছেলে মাকছুদার রহমানের (৩২) সঙ্গে পরিচয়ের পর প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। তিন বছর আগে প্রস্তাবের মাধ্যমে পারিবারিক সম্মতিতে বিয়ে হয় তাদের। মৃত্যুর সময় ৫মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল রুমকী । মা রিনা বেগম ও বাবা আশরাফ হোসেনের আদরের সন্তান ছিল সে। তার মৃত্যুতে শোকের মাতম চলছে তার পরিবারে । প্রসঙ্গত গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় বনানীর এফআর টাওয়ারের ৯ম তলায় অগ্নিকাণ্ডের সুত্রপাত হয়ে ২৬জনের মৃত্যু ও ৭০ জন আহত হয়।