বিজ্ঞাপন দিন

জলঢাকায় আ’লীগের সভাপতি,সম্পাদকসহ সহস্রাধিক আসামী ॥ গ্রেফতার-৫

ফরহাদ ইসলাম,জলঢাকা (নীলফামারী) প্রতিনিধিঃ জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসে নীলফামারীর জলঢাকায় আওয়ামী লীগের শোকর‌্যালীতে হামলা ও দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের একটিসহ তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে। এতে উপজেলা আ’লীগের সভাপতি আনছার আলী মিন্টু,সাধারন সম্পাদক সহীদ হোসেন রুবেল,সাবেক এমপি অধ্যাপক গোলাম মোস্তফাসহ সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় শুক্রবার গভীর রাতে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন,মীরগঞ্জ ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক হেলালুজ্জামান হেলাল,যুবলীগ সদস্য হারুন-অর রশিদ রাসেল, বালাগ্রাম ইউনিয়ন ৫নং ওয়ার্ড আ’লীগ সভাপতি ইবনে নুর,ইন্দ্রোজিৎ রায়,ছাত্রলীগ কর্মী মিলাত হোসেন। 

সুত্রে জানা যায়, গত ১৫ আগষ্ট শোক দিবসের সংঘর্ষের ঘটনায় ওই দিন রাতে উপজেলা আ’লীগ সভাপতি আনছার আলী মিন্টু বাদি হয়ে সাবেক এমপি অধ্যাপক গোলাম মোস্তফাসহ ৭০ জনের নাম উলেখ করে ও অজ্ঞাত আরও পাঁচ শত জনকে আসামি করা হয়। মামলা নং ১৭ তারিখঃ ১৫/০৮/১৯ইং। অপর দিকে একই দিনে পৌর আ’লীগ সভাপতি আশরাফ হোসেন বাদি হয়ে উপজেলা আ’লীগ সভাপতি আনছার আলী মিন্টু,সাধারন সম্পাদক সহীদ হোসেন রুবেলকে প্রধান করে নামীয় ৬৩ ও অজ্ঞাত দুই’শ জনকে আসামি করা হয়। মামলা নং ১৮ তারিখঃ ১৬/০৮/১৯ইং। ওই দিনের সংর্ঘষের ঘটনায় জলঢাকা থানার এসআই মামুন-অর রশিদ হামলার শিকার হয়ে আহত হলে এসআই আব্দুর রশিদ বাদি হয়ে ২০ জনের নাম উলেখ করে এবং আরো ১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ১৯ তারিখঃ ১৬/০৮/১৯ইং। এ বিষয়ে জলঢাকা থানা অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,‘‘ঘটনার দিন একজন এবং শুক্রবার রাতে উভয় পক্ষের মামলায় ৪জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ 

এ ঘটনায় শুক্রবার সকালে দুপক্ষের সাথে বৈঠক করেছেন নীলফামারী জেলা আ’লীগ নেতারা। উপজেলা আ’লীগ সভাপতি আনছার আলী মিন্টু ও সাধারণ সম্পাদক সহীদ হোসেন রুবেলসহ তাদের সমর্থকদের সাথে পৌর আওয়ামীলীগ কার্যালয় এবং সাবেক এমপি গোলাম মোস্তফাসহ তার সমর্থকদের সাথে জলঢাকা সরকারী মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে বৈঠকে বসে জেলা নেতৃবৃন্দ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন,নীলফামারী জেলা আ’লীগ সভাপতি দেওয়ান কামাল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক এড.মমতাজুল হক, সাংগঠনিক সস্পাদক হাফিজুর রশিদ মঞ্জু ও শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আমজাদ হোসেন। বিকাল সাড়ে ৩টায় বৈঠক শেষে নীলফামারী জেলা সভাপতি দেওয়ান কামাল আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, সমঝোতার জন্য দুই পক্ষের সাথে আলোচনা করছি। ভবিষ্যতে যাতে এর পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে বিষয়ে স্থানীয় নেতাদের হুশিয়ার করে দেওয়া হয়েছে। 

উলেখ্য,গত ১৫ আগষ্ট জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু চত্বরে দলীয় দুই গ্রপের বিরোধের কারনে তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এক গ্র“পের নেতৃত্ব দেন উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আনসার আলী মিন্টু ও সাধারন সম্পাদক সহীদ হোসেন রুবেল আর অপর গ্র“পের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মোস্তফা। এতে দু’পক্ষই লাঠি সোডা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। শুরু হয় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। পুলিশ লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে ব্যর্থ হয়ে অবশেষে কাদুনে গ্যাস আর রাবার বুলেট ছুড়ে। এতে জলঢাকা থানার উপ-পরিদর্শক মামুন, কনষ্টেবল মেহেদী হাসান, রুবেল আহত হয়। পুলিশের উপ-পরিদর্শক মামুন ও শাহেনুর রহমান নামে এক পথচারী আশঙ্কাজনক অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আর অন্যান্যরা জলঢাকা উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।