বিজ্ঞাপন দিন

জলঢাকায় একই কলেজে দুই সভাপতি দুই অধ্যক্ষ ! এলাকায় চাঞ্চাল্য সৃষ্টি ॥

ফরহাদ ইসলাম জলঢাকা (নীলফামারী) প্রতিনিধিঃ নীলফামারীর জলঢাকায় এক কলেজে দুই সভাপতি ও দুই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দায়িত্ব পালন করছেন। ফলে কলেজের পাঠদান বিঘ্নিত হচ্ছে। জলঢাকা উপজেলার মীরগঞ্জ হাট ডিগ্রি মহাবিদ্যালয়ে এই পরিস্থিতি বিরাজ করছে। জানা গেছে, গত বছরের ১ অক্টোবর সাবেক অধ্যক্ষ বজলার রহমান বজু পদত্যাগ করে নিজেই পরিচালনা কমিটির সভাপতি হয়ে শিক্ষক আবুজার রহমানকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেন। জ্যেষ্ঠতার দিক থেকে ১২তম অবস্থানে থাকা এই শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ করার ক্ষেত্রে চাকরি বিধি লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এব্যাপারে লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই প্রতিষ্ঠানের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক আবদুস ছাত্তার।অন্যদিকে গত ২৯ জানুয়ারি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গভর্নিং বডির সভাপতি বজলুর রহমানকে অব্যাহতি দিয়ে আফজালুল হককে সভাপতি মনোনীত করে চিঠি দেয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পক্ষে চিঠিতে স্বাক্ষর করেন ভারপ্রাপ্ত কলেজ পরিদর্শক ড. মোঃ মনিরুজ্জামান। সেই চিঠির ভিত্তিতে সভাপতি আফজালুল হক গত ৫ ফেব্রুয়ারি গভর্নিং বডির সভা করে আবুজার রহমানকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে জ্যেষ্ঠ শিক্ষক আব্দুস ছাত্তারকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব প্রদান করেন।

তবে সভাপতি আফজালুল হক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে আব্দুস সাত্তারকে দায়িত্ব দিলেও আরেক সভাপতি বজলার রহমান বজুর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেয়া আবুজার রহমান এখনো দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি আব্দুস ছাত্তারকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেননি। এমনকি আবুজার রহমান তার অনুপস্থিতিতে অধ্যক্ষের কক্ষ তালাবদ্ধ করে যান বলেও অভিযোগ করেছেন কলেজের একাধিক শিক্ষক। এই পরিস্থিতিতে শ্রেণিকক্ষে পাঠদানে সমস্যাসহ বিভিন্ন সমস্যা হচ্ছে বলে জানান শিক্ষকরা।
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবুজার রহমান বলেন, কমিটি আমাকে দায়িত্ব দেয়ার পর আমি হাইকোর্টে রিট করেছি এবং সেই রিটের আদেশ বলে দায়িত্ব পালন করছি। রিটের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত অন্য কাউকে দায়িত্ব দেয়া ঠিক হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি।

অন্যদিকে আরেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পত্রের আলোকে গভর্নিং বডির সভাপতি কমিটির সভা করে আমাকে বিধি অনুযায়ী দায়িত্ব প্রদান করেছে। কিন্ত আবুজার রহমান জোর করে দায়িত্ব পালন করছেন।
কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ এবং বর্তমান সভাপতি বজলার রহমান বজু বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আমাকে সভাপতি হিসেবে পত্র দিয়েছে সেই আলোকে আমি দায়িত্ব পালন করছি। জ্যেষ্ঠ শিক্ষকরা দায়িত্ব নিতে অপারগতা প্রকাশ করেছিলেন।

কলেজের অপর সভাপতি আফজালুল হক বলেন, আমার কমিটির মেয়াদ ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের জুন মাস পর্যন্ত ছিল, আমাকে অবৈধভাবে সরানো হয়েছিল। আমি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে আবেদন করে পুনরায় সভাপতি পদটি ফেরত পেয়েছি এবং কমিটির সভা করে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে আব্দুস সাত্তারকে দায়িত্ব দিয়েছি।

এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা চঞ্চল কুমার ভৌমিক বলেন, যেহেতু কলেজগুলো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ন্ত্রণ করে, তাই মাধ্যমিক অফিসের এখানে কিছু করার নেই। তবে বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবগত রয়েছি।