রতন কুমার রায়,ডোমার (নীলফামারী) প্রতিনিধি: ভুল প্রবেশপত্র দিয়ে পরীক্ষায় অংশ গ্রহনের জন্য চাপ সৃষ্টি করায় এসএসসি পরীক্ষার্থী তৃষ্ণা রায়ের (১৪) আত্নহত্যা প্ররোচনার মামলায় গ্রেফতার হয়েছে নীলফামারীর ডোমার উপজেলার মাহিগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) সিরাজুল ইসলাম। রবিবার বিকালে ডোমার থানার ওসি মোস্তাফিজার রহমানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ স্কুল ক্যাম্পাস থেকে তাকে গ্রেফতার করে। উক্ত প্রধান শিক্ষক উপজেলার বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের বাগডোকরা গ্রামের ইউসুফ আলীর ছেলে। বিকালে শিক্ষা বোর্ডের সচিবের নির্দেশে তাকে প্রধান শিক্ষকের পদ হতে সাময়িক বরখাস্ত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনা শবনম।
এর আগে ওই স্কুলের শিক্ষার্থীরা ক্লাশ বর্জন করে গত কয়েকদিন ধরে প্রধান শিক্ষককে গ্রেফতার সহ বিচারের দাবী তুলে সড়ক অবরোধ বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসুচী পালন করে আসছিল। রবিবার দুপুর হতে দুই ঘন্টা ব্যাপী শিক্ষার্থীদের ওই কর্মসুচী চলাকালীন সময়ে প্রধান শিক্ষক গ্রেফতার করা হয় বলে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীরা জানায়।
এদিকে বিকালে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের সচিব আমিনুল হক সরকারের একটি আদেশে ডোমার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনা শবনম উক্ত প্রধান শিক্ষককে চাকুরী থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন।
ডোমার থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজার রহমান জানান, প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম স্কুলে অবস্থান করছে খবর পাওয়া মাত্র আমি পুলিশ ফোর্স নিয়ে স্কুলে ছুটে গিয়ে তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই। ওই প্রধান শিক্ষকের বিরদ্ধে তৃষ্ণা রায়ের বাবা বাদী হয়ে আত্নহত্যা প্ররোচনার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেছে।
প্রসঙ্গত, গত দুই বছর আগে নবম শ্রেণীতে বানিজ্য বিভাগে রেজিষ্ট্রেশন করে তৃষ্ণা রানী। গত তিন ফেব্রুয়ারী এসএসসি পরীক্ষার আগের দিন দুই ফেব্রুয়ারী দুপুরে সে প্রবেশ পত্র হাতে পেয়ে জানতে পারে, তাকে মানবিক বিভাগে পরীক্ষা দিতে হবে। তৃষ্ণা প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলামের কাছে গিয়ে সে প্রবেশপত্র ভুলের বিষয়টি জানতে চায়। এতে প্রধান শিক্ষক তাকে মানবিক বিভাগের তিনটি বই হাতে তুলে দিয়ে বলেন, বাড়ীতে গিয়ে এই বইগুলো ভালোভাবে পড়ে পরীক্ষা দাও। এতে তৃষ্ণা রাগে ও অভিমানে নিজ বাড়ীর শোয়ার ঘরে বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের বাগডোকরা দধিপাড়া গ্রামে গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করে।
