বিজ্ঞাপন দিন

তিস্তার চরে ভুট্টার বাম্পার ফলন তামাকের পরিবর্তে ভুট্টা আবাদে আগ্রহ বেশি কৃষকরা

আবেদ আলী স্টাফ রিপোর্টারঃ তিস্তার চরে ফসল ফলিয়ে পাল্টে যাচ্ছে চরবাসিদের জীবন চিত্র। একসময়ের অনাহারে - অর্ধাহারে দিন পার করা মানুষগুলো এখন আর কষ্টের বানী শুনান না। তারা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শ্রমদিয়ে চাষাবাদ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। নীলফামারীর জলঢাকায় তিস্তার ধুধু বালুচরে ভুট্টার আবাদে যেন সবুজের সমারোহ। তামাকের পরিবর্তে বিভিন্ন জাতের ভূট্টার আবাদে বেশি আগ্রহ হয়েছেন কৃষকরা। এবছর ভুট্টার ব্যাম্পার ফলনের আশায় কৃষকরা দিনরাত পরিশ্রম করছেন। উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে আবাদ হয়েছে ভুট্টা। তিস্তা নদীর বালুচর ছাড়াও জলঢাকা পৌর এলাকাসহ উপজেলার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ী, শৌলমারী, কৈমারী, খুটামারা, বালাগ্রাম, গোলনা, মীরগঞ্জ শিমুলবাড়ী ও ধর্মপাল ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে ব্যাপকভাবে ভুট্টার আবাদ করছেন কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এবারে ভুট্টার ফলনে বিপ্লব ঘটবে, এমনটাই প্রত্যাশা উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের। স্থানীয় ভাবে ভুট্টা চাষিরা জলঢাকায় ভুট্টা সংরক্ষণ কেন্দ্রের পাশাপাশি ভুট্টা প্রক্রিয়াজাত কারখানা চালু করা দাবি করেছেন। গতকাল শুক্রবার সরেজমিনে গোলমুন্ডার হলদি বাড়ীর চরে গেলে, কৃষক সাদেকুল ইসলাম ও আব্দুল জব্বার জানায়, ভুট্টা প্রক্রিয়াজাত কারখানা চালু করা হলে স্থানীয় বাজারগুলোতে ভুট্টার দাম নিশ্চিত হওয়ার পাশাপাশি এলাকার কর্মহীন মানুষদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হতে পারে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে ১৭ হাজার হেক্টরে ভুট্টা আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও আবাদ হয়েছে ১৭ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে। যার লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ১৬ হাজার মেট্রিকটন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহ মাহফুজুল হক জানান, এবারে আবহাওয়া অনুকুলে থাকার কারণে অন্যবছরের তুলনায় ভূট্টার আবাদে কোন পোকার আক্রমণ না থাকায় বাম্পার ফলনের আশা করা যাচ্ছে। কৃষক রুহুল আমিন জানায়, গতবছর যে জমিগুলোতে তামাক আবাদ করেছিলাম সে জমিগুলোতে এবার তাকের পরিবর্তে ভুট্টা লাগিয়েছি। সবমিলিয়ে ৪বিঘা জমিতে ভুট্টা আবাদ করছি সময়মতো সার ও পানি দেয়ার ফলে ফলন ভাল হয়েছে। আশার করছি বিঘা, প্রতি ২৫ থেকে ২৭ মণ, এমনকি তারও বেশি ফলন হতে পারে এমনটাই আশা করা যায়। তবে বাজার মূলটা ভাল পাওয়া গেলে আগামীতে সব জমিতেই ভূট্টা লাগাবো। তিস্তা পাড়ের কৃষক আলিমুল কৃষকদের ও মাজেদা বেগম জানায়, আগে বছরের পর বছর ধরে এসব জমি পড়ে থাকতো। বিভিন্ন এনজিও সংস্থা এবং কৃষি অফিস থেকে আমাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার এখন এই পরে থাকা জমিগুলোতেই গম, ভূট্টা, ধান, মিষ্টি কুমড়া ও শাকসবজি সহ নানান ধরনের ফসল তুলতে পারছি। একসময়ে তিস্তা পাড়ের মানুষেরা অনাহারে - অর্ধাহারে থাকতো। কচুমিচু খেয়ে দিনপার করতো তারা। এখন পালটে গেছে তাদের সে জীবন চিত্র। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তিস্তার বুকচিরে ফসল তুলে নিজেদের চাহিদা পুরণ করে বিক্রি করছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এতে করে স্বাবলম্বীও হচ্ছেন তারা।