বিজ্ঞাপন দিন

জলঢাকার জমসেদ আলী একজন আপাদমস্তক রাজনীতিবিদ

জল ডেস্ক : মরহুম জমসেদ আলী  ৭ মে ১৯২২ সালে নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলায় বালাগ্রাম ইউনিয়নে এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়েন । মরহুম জমসেদ আলী ১৯৪৯ সালে জলঢাকা থানা শাখার আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন । তিনি ১৯৫২ সালের ভাষা সংগ্রাম পরিষদের জলঢাকা থানা কমিটির আহবায়ক ছিলেন । ১৯৪৯ - ১৯৬২ পর্যন্ত জলঢাকা থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করেন । ১৯৫৪ সালে তিনি যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনের সময় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন, হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী সাহেবের বিশেষ টেলিগ্রাম বার্তায় তিনি ছাড়া পান । ১৯৬২ সালে তিনি জলঢাকা থানা আওয়ামীলীগ এর সভাপতি নির্বাচিত হন । ১৯৬২ - ১৯৭২ পর্যন্ত তিনি প্রথম দফায় সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন । সে সময় সমস্ত আন্দোলন সংগ্রামে তার ভূমিকা দারুণভাবে প্রসংশনীয় । প্রয়াত জমসেদ আলী মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় জলঢাকা থানা সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক ছিলেন । এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে তার ভূমিকা এই অঞ্চলে অবিস্মরণীয় । ১৯৭২ সালে নীলফামারীর এক জনসভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান লাখো মানুষের মাঝ থেকে মঞ্চে তাকে ডেকে নিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন ‘’জমসেদ এখানে আসো ‘’ এটি তার জন্য একটি বিরল সম্মান । ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্টের পর জলঢাকা আওয়ামীলীগ পুনর্গঠনে সর্বশক্তি নিয়োগ করেন। বিভিন্ন দলীয় কর্মসূচিতে তিনি ও তার পরিবার বরাবরই নেতৃত্ব দিতেন,হলদিবাড়ি তদানীন্তন তরলিবাড়ি পর্যন্ত বাইসাইকেলে করে পাড়া-মহল্লা গ্রামগঞ্জ ঘুরে ঘুরে আজীবন দলীয় কার্যক্রম চালাতেন । তৎকালীন সময়ে তার দ্বিতীয় মেয়ের বিয়েতে ডেকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু পাঁচ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। ১৯৭৫ এর বিয়োগান্ত ঘটনার পর তিনি ১৯৭৭ সালে ২য় দফায় জলঢাকা থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন এবং ১৯৮৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত জলঢাকা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও ১৫ দলীয় ঐক্য জোটের জলঢাকা উপজেলা শাখার আহবায়ক অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন । তিনি স্বাধীনতা পূর্ব সময়ে তদানিন্তন রংপুর জেলা আওয়ামীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন । সত্যিকার অর্থে একজন অনুকরণীয় নেতা অকুতোভয় এই নেতা সত্য কথা বলতে এবং অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে কখনোই দ্বিধা করতেন না। আওয়ামী লীগ যখন বিরোধী দলে ছিল তখন বারবার রাজপথে নির্যাতিত হয়েছেন। তিনি হাতে তৈরি টিনের চোঙ্গা তার বাইসাইকেলে রাখতেন ,যখন দলীয় প্রোগ্রামের মাইকিং করার কেউ ছিলনা তখন তিনি একটি বাইসাইকেলে মাইক বেঁধে সমস্ত উপজেলায় মাইকিং করে বেড়াতেন দলকে সুসংগঠিত করার লক্ষ্যে । তার এই চিন্তা-ভাবনা জলঢাকাবাসীকে এখনো নাড়া দেয় । মরহুম জমসেদ আলী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের অত্যন্ত স্নেহভাজন ব্যক্তি ছিলেন । তার আর্দশের প্রশ্নে তিনি ছিলেন আপোষহীন ও নির্ভীক ।