বিজ্ঞাপন দিন

তারাগঞ্জে হোটেল শ্রমিকদের আর্তনাদ

সিরাজুল ইসলাম বিজয়, তারাগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধিঃ নভেল করোনা ভাইরাসের কারণে অসহায় দরিদ্র ও শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী প্রদানে সরকারের নির্দেশ থাকলেও নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষের মধ্যে এখন পর্যন্ত কোন খাদ্য সহায়তা পায়নি রংপুরের তারাগঞ্জের হোটেল শ্রমিকরা। সারা দেশের ন্যায় রংপুরের তারাগঞ্জে করোনা ভাইরাসের কারণে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক হোটেল, রেষ্টুরেন্ট, চায়ের দোকান, বেকারী, কনফেকশনারী , ফুচকা-চটপটি ও ছোট বড় সকল প্রকার খাবারের দোকান বন্ধ ঘোষণা করা হলে নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষের মতো বিপাকে পড়েছেন হোটেল শ্রমিকরা। দিন শেষে যাদের দুই হতে তিন’শ টাকা দিয়ে চলে সংসারের চাকা। সেই সাধারণ মানুষ সরকারি নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করেই দল বেধে সারি বদ্ধ হয়ে ভীড় জমিয়েছেন জীবিকার তাগিদে উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজার ও মাঠের কাজে। উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের হোটেল কারিগর মনোয়ার হোসেন বলেন, কাজ না করলে মোর সংসার চলাইবে কায় সরকার নাকি মেম্বার চেয়ারম্যান। দুই সপ্তাহ হইল কায়ো কোন দিন জিজ্ঞেস করিল না বাহে কি খাইছেন। মুখোত বড় কথা সবায় কয়, আরে ওমরাতো মুখ দেখি দেখি অনুদান দেওচে। কুর্শা ইউনিয়নের পশ্চিম রহিমাপুর গ্রামের ভাই ভাই হোটেল মালিক জাহিদুল ইসলাম বলেন, স্যার হামার খোজ খবর কায় নেয়। দুই সপ্তাহ হইল হোটেল বন্ধ হবার খেয়া না খেয়া আছি কোন কথা কইল না কায়ো। কর্মচারীর মতো হামারো একে অবস্থা। চাল্লিয়ারপার গ্রামের চা ব্যবসায়ী ডিম রবি বলেন, সরকারের ছুটি মেলা দিন হইলো কিন্তু এখনো ঘরে কেউ এক কেজি চালও নিয়ে আসে নাই। আমার বাচ্চাটা প্রতিবন্ধী তারেও ঠিকমতো খাবার দিতে পারি না। ঘর থাকি বের হইলে পুলিশের কথা শোনার লাগে। টিভিত শুনছি দেশে খাবারের অভাব নাই কিন্তু কই আমাদের ঘরেতো খাবারে নাই। ভোটের সময় ঠিকই মুখে ফুল ফোটে অভাবের সময় কারো দেখা নাই। বুড়িরহাট দামোদরপুর গ্রামের হোটেল শ্রমিক নাজমুল মিয়া বলেন, দাদা সরকার তো মেলা অনুদান দেছে শুনছো টিভিত। হামার বাড়ি থাকি চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা ভোটের আইডি কাড নিয়া গেইছে। আইজ মোড় বাড়িত ভাত নাই। কোনদিন যে অনুদান দিবে। এখন কি খাই। বাড়ি থাকি বেড়ারও পাওছি না, কেমন করি সংসার চালাই। হামার পেট তো কথা শুনে না। সয়ার বারাপুর গ্রামের হোটেল শ্রমিক রশিদ মিয়া বলেন, সরকার হামার বাড়ি বাড়ি খাবার পৌছে দিতে বললেও, কই আমাদের ঘরেতো এখনো খাবার আইলো না। মুখ দেখি-দেখি খাবার দিলে গরীবরা বাঁচপে ক্যামন করি। আমরা কারো কাছ থেকে সাহায্য পাইনি, কেউ খোঁজও নেয়নি আমাদের। ভোট আইলে হাত-পাও ধরে , এখন তাদের খবর নাই। সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ অসহায় হোটেল শ্রমিকদের জন্য সরকার যেন কিছু অনুদানের ব্যবস্থা করেন। কুর্শা ইউপি চেয়ারম্যান আফজালুল হক সরকার বলেন, আমি সবার খোজ খবর রাখার চেষ্টা করছি। গ্রামে গিয়ে হত দরিদ্রদের তালিকা করেছি। পর্যায়ক্রমে তাদের মধ্যে চাল ডাল আলু তেল দেয়া হবে। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান লিটন বলেন, সরকার এই করোনা মোকাবেলায় গরীব অসচ্ছলদের জন্য চাল ডাল আলু বিতরণের সুযোগ করে দিয়েছেন। পযার্য়ক্রমে তালিকা অনুযায়ী তাদের মধ্যে ওই ত্রাণ বিতরণ করা হবে।