বিজ্ঞাপন দিন

তারাগঞ্জে করোনার নির্দেশনা মানছেন জীবন যুদ্ধে মানুষ

সিরাজুল ইসলাম বিজয়, তারাগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধিঃ সারা বিশ্ব যখন করোনা ভাইরাসের তান্ডবে বিপর্যস্ত। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের আক্রমণ থেকে বাঁচতে বিশ্বের সব দেশের মানুষেই ঘরের ভেতরে বন্দি জীবন যাপন করছে। পুরো বিশে^ প্রায় দেশ গুলো যখন করোনা আক্রান্তে মহামারিতে পরিণত হয়েছে। ক্রমাগত ঠিকই এই প্রাণঘাতী ভাইরাস বাংলাদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারি নিয়মানুসারে সবাইকে ঘরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু জীবন যুদ্ধে সেই নির্দেশনা মানছেন না খেটে খাওয়া দিন মজুর ও নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষ। যাদের দিন শেষে দুই হতে তিন’শ টাকা দিয়ে চলে সংসারের চাকা। সেই সাধারন মানুষ সরকারি নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করেই দল বেধে সারি বদ্ধ হয়ে ভীড় জমিয়েছেন রংপুরের তারাগঞ্জ ঐতিহ্যবাহী হাটে। দিনের প্রথম বেলায় তেমন কাউকে বাইরে দেখা যায় না। কিন্তু দুপুর গড়িয়ে বিকেল ও সন্ধ্যা হলেই গ্রামের পাড়া-মহল্লা, চায়ের দোকানে সহ রাস্তার মোড়ে মোড়ে ভীড় জমে উঠে। আবার সাপ্তাহিক হাটে চাল ডাল কাচা বাজার সহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের ছুটে আসেন তারা এই তারাগঞ্জ হাটে। সরেজমিনে দেখা গেছে, আজ সোমবার বাজারে অগ্রণী ব্যাংকের মোড়ে লোকজনের সমাগম ছিল স্বাভাবিক হাট বারের মতো। তবে করোনা ভাইরাসের জন্য যেখানে কঠোর আইন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা সেখানে কোন আইন মানছেন না সাধারণ মানুষ। পরে মুদি দোকান সহ বাজারের চিত্র একে বারেই ভিন্ন। প্রশাসনের পক্ষ হতে যেখানে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য তিন ফিট দুরত্ব রেখে ক্রয়ের নির্দেশ দিয়ে সাংকেতিক চিহ্ন ব্যবহার করেছেন। কিন্তু সেখানে গাদাগাদি করে মানুষ মাছের বাজার মাংসের বাজার চায়ের দোকান প্রসাধনি সহ ব্রয়লার মুরগির দোকান পর্যন্ত কোন ব্যবসায়িই সেই নির্দেশনা মানছেন না। প্রসাধনী ব্যবসায়ি সাদেক বাচ্চু বলেন, আমার দোকানে আল্লাহ আছে কারও কোন ক্ষতি করবে না করোনা ভাইরাস। মালের গ্যারান্টি আছে, তবে স্টক লিমিট থাকায় একটু দাম বেশি। ঝাকুয়াপাড়া গ্রামের কৃষক শফিকুল মিয়া বলেন, বাহিরে কাজ না করলে মোর সংসার চলাইবে কায় সরকার নাকি মেম্বার চেয়ারম্যান। দুই সপ্তাহ হইল কায়ো কোন দিন জিজ্ঞেস করিল না বাহে কি খাইসেন। মুখোত বড় কথা সবায় কয়। পুটিমারি গ্রামের মোশারফ মিয়া বলেন, আরে ভাই কোনো লাভ নাই,পৃথিবি আর টিকবার নয় মরন হইলে এমনি মরমো। হাট বাজারোত না গেইলে কি থাকা যায়। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে অবাধে ঘোড়াফেড়ার কারণে যেকোন সময় ছড়িয়ে যেতে পারে মরণঘাতী করোনা ভাইরাস। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমিনুল ইসলাম বলেন, সারা বিশ্ব এখন প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত, বিশ্বের উন্নত দেশগুলো যেখানে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে হিমশিম খাচ্ছে। তাই পরিবার ও এলাকাকে রক্ষা করার জন্য আমাদের নিজেরাই আগে সচেতন হতে হবে। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান লিটন বলেন, উপজেলার প্রতিটি হাট বাজার ও সড়কে জীবাণুনাশক ওষুধ স্প্রে করা হচ্ছে। এতে গ্রাম গঞ্জে জীবাণু বিস্তারে অনেকটাই রোধ হবে। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাসা থেকে বাইরে যাবেন না। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে আতঙ্কিত না হয়ে সবাইকে সচেতন থাকার পরামর্শ দেন। তারাগঞ্জ থানার ওসি তদন্ত শুকুর আলী মিয়া বলেন, উর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশ অনুযায়ী আমরা সকলকেই সচেতন ও নিরাপদ থাকার আহবান জানিয়েছি। করোনার সকল দিক তুলে ধরে আমরা চেষ্টা করছি প্রতি মুহুর্তে মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে।