বিজ্ঞাপন দিন

নীলফামারী-সৈয়দপুর মহাসড়কে জমি অধিগ্রহণ না হওয়ায় চরম ভোগান্তিত্বে সাধারন মানুষ

আব্দুল মালেক, নীলফামারী প্রতিনিধিঃ ভূমি অধিগ্রহণে অনিয়মে অনিশ্চয়তায় পড়েছে নীলফামারী-সৈয়দপুর সড়ক প্রশ্বস্তকরণ ও সংস্কার কাজ। জেলার গুরুত্বপূর্ণ প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প নীলফামারী-সৈয়দপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মাণের জন্য ২০১৭ সালে প্রকল্পটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ২২ হেক্টর জমি অধিগ্রহন করা হয়। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের হুকুম দখল শাখার দায়িত্ব জমি অধিগ্রহনের। নিয়মানুযায়ী জমি হুকুম দখলের কাজ অব্যাহত থাকে।

জমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন না হওয়ায় স্থবির হয়ে পড়েছে ২২৫ কোটি  টাকা ব্যয়ে নীলফামারী-সৈয়দপুর সড়ক প্রশ্বস্তকরণ ও মজবুতীকরণ কাজ। প্রকল্প বাস্তবায়নে ২ বছর  হাতে থাকলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শিল্পনগরী হিসেবে পরিচিতি লাভ করা জেলার গুরুত্বপূর্ণ এই কাজ নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছে সড়ক বিভাগ ও বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান । এদিকে, ভূমি অধিগ্রহণ ও অবকাঠামোর ক্ষতিপূরণ জন্য ৭ ধারা নোটিশ প্রদান করে সংশ্নিষ্টরা মালিকদের জিম্মি রেখেছেন। কিন্তু ২২ মাস হয়ে গেলেও ৮ ধারা নোটিশ আর প্রদান করে, এখনো ভূমি অধিগ্রহণ হয় না । ৭ ধারা নোটিশ পাওয়ার পর থেকে কোন ভবন বা অবকাঠামো নির্মান করতে পারছে , জমিও কেনা বেচা করতে পারছে না ।  ভূমি  অধিগ্রহণ অফিসের উপর আস্থা হাড়িয়ে অনিশ্চয়তা পরে আছে সাধারন মানুষ।



সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে প্রকল্প বাস্তবায়নে উদ্যোগ গ্রহণ করে সড়ক বিভাগ। একই বছরের আগস্ট মাসে ঠিকাদারি দুটি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। কাজ শুরু থেকে ঝামেলা পড়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নাভানা, রানা বিল্ডার্স ও ইসলাম ব্রাদার্স (জেভি)। তারা জমি অধিগ্রহণ চাইলে সড়ক ও জনপদ বিভাগ দায়সারাভাবে এড়িয়ে যায়। এরকম করেই কাজ এগিয়ে চলে। শুধু মুখ থুবড়ে পড়ে চৌরঙ্গী মোড় থেকে কালিতলা রাস্তা প্রসস্থ করণের কাজ । গত ২০১৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু করে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ সম্পাদনের সময়সীমা থাকলেও কাজ শুরুর ২২ মাসেও তেমন অগ্রগতি দেখা যায়নি।



ঠিকাদার মিজানুর রহমান বলেন, নীলফামারী থেকে সৈয়দপুর সড়কের প্রথম অংশে সাড়ে সাত কিলোমিটারের কাজ করেছি।  গ্লোরি সিরামিকস থেকে শহরের দিকে কালীতলা বাস টার্মিনাল পর্যন্ত সড়কের কাজ এগিয়ে চললেও কালীতলা থেকে শহরের প্রবেশপথে কোনো জমি বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি আমাদের, তাই জায়গার অভাবে  কাজ করা সম্ভব হয়নি। মাধার মোড়ের তরিকুল ইসলাম বলেন, জমির টাকা বুঝে পাইনি, হটাৎ করে কোথায় বাড়ি বানাবো। উপজেলা সড়কের মুকুল বলেন, বিল্ডিং ভাঙতে হবে, কিন্তু এখন অবধি কোন সারা পাইনি । নীলফামারী জেলা শহরের যানজট নিরসন কল্পে কালীতলা বাস টামির্নাল হইতে শহরের চৌরঙ্গী মোড় পর্যন্ত প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও আজও তা বাস্তবায়ীত হচ্ছে না। কবে নাগদ এই প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু হবে তা এখনও অনিশ্চিতায় রয়েছে ।   এ কাজ শুরুর প্রক্রিয়া জেলা শহরটিতে যানজট বেড়ে গিয়ে ব্যাপক জনর্দূভোগ সৃষ্টি হয়েছে।



কালীতলা বাস টামির্নাল হইতে শহর চৌরঙ্গী মোড় পর্যন্ত প্রকল্প এল.এ কেস ০১ /১৮-১৯ । জমির ফিল্ড বুক তৈরি করে ৭ ধারা নোটিশ প্রদান করে কিন্তু আদো পর্যন্ত জমি অধিগ্রহনের  বাস্তবায়ন কাজ শুরু হবে তা এখনও অনিশ্চিতায় রয়েছে। যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারি, তাহলে প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হবে, এমনকি প্রকল্প থমকে যেতে পারে। চৌরঙ্গী মোড় থেকে মাধার মোড় পর্যন্ত প্রতিনিয়ত দিন যানজট লেগেই থাকে। এই যানজটের কারণে প্রতিদিন বাস-ট্রাক, অটোরিক্সা, অটোবাইক ও মোটরসাইকেলের সাথে দুর্ঘটনা ঘটছে। ফলে স্বল্প পরিসরের সড়কগুলো দিয়ে পথচারীদের চলাচল বিঘ্ন্তিন হচ্ছে এবং জীবন ও সম্পদের ক্ষতি হচ্ছে।



সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মাদ মনজুরুল করিম জানান, কার্যাদেশ প্রদানের ২২ মাস অতিবাহিত হলেও কাজ সন্তোষজনক ভাবে এগোয়নি। ভূমি অধিগ্রহণ, গাছ কর্তন, বিদ্যুতের খুঁটি প্রতিস্থাপন কাজে ধীরগতির কারণে কাজও ধীরগতিতে চলছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজটি শেষ করতে না পারলে নানা সমস্যায় পড়তে হবে। 



জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, জমি অধিগ্রহণ দীর্ঘ মেয়াদি কাজ । কাজ গুলো চলমান রয়েছে আইন অনুযায়ী করতে হচ্ছে । প্রথম ফেজের মালিকদের কাছে ক্ষতিপূরণের টাকা হস্তান্তর করা হয়েছে । আগামী ১মাসের মধ্যে সড়ক বিভাগকে জমি বুঝিয়ে দেওয়া হবে। তিনি বলেন, যদি কেউ অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।