বিজ্ঞাপন দিন

একটি কম্বলের আত্ম কাহিনী।



---অবিনাশ রায়
আমি একটি কম্বল বলছি,যদিও আমি অতি সামান্য ও অতি সাধারণ একটি বস্তু!তবুও আমাকে নিয়ে এদেশে রাজনীতির শেষ নেই!
সেই কবে বাঙালী জাতির মুক্তির দিশারি,জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বড় আক্ষেপ করে বলেছিলেন,"সাত কোটি বাঙালীর জন্য সাত কোটি কম্বল,আমার কম্বলটি কোথায়?"
তাঁর সেই উক্তিটির পর বহুকাল কেটে গেছে,কিন্তু জাতীয় জীবনে সেই উক্তির প্রেক্ষিতে এ দেশের দৃশ্যপটের খুব একটা হের ফের হয়নি!
শীত আসে শীত যায়।
শীত এলে আমাকে নিয়ে শুরু হয় টানাটানি।মৌসুমি পাখির মত,শীত এলে আমার গুরুত্ব বহু গুণ বেড়ে যায়!
শীত শেষ হলে,আমারও গল্পের শেষ হয়।তবে কিছুদিন থেকে যায় সেই গল্পের রেশ!
কারখানা থেকে বেড়িয়ে বহু হাত ঘুরে,আমি ঠাঁই পাই শীতার্ত মানুষের কোলে।
যখন প্রকৃত কোন শীতার্ত মানুষকে আমি উষ্ণতা দিতে পারি,তখন আমার জীবনের স্বার্থকতা উপলব্ধি করতে পারি।
কিন্তু উষ্ণতার আড়ালে যখন কোন অপ্রয়োজনীয় মানুষের ঘরের বিছানায় গাদাগাদি করে তোষকের উপরে আমার ঠাঁই হয়,তখন আমার এই জীবনটাকে ব্যর্থ মনে হয়!
ডিজিটাল যুগ এসে আমারও ঠাঁই হয়েছে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে।
যতটা না শীতার্ত মানুষের প্রতি সহমর্মিতা,তার চেয়েও বেশি আত্ম প্রচারের দিকে দৃষ্টি!
আত্ম প্রচার করুক তাতে কোন অসুবিধা নেই।তবে সুষম বন্টনের মাধ্যমে প্রকৃত শীতার্ত মানুষের কোলে যেন আমার ঠাঁই হয় এই নিবেদন টুকু রইল।
পরিশেষে বলতে চাই,এই দেশের উত্তরাঞ্চল হিমালয় পর্বতমালার পাদদেশে হওয়ার দরুন,এখানে শীতের প্রকোপ সবার আগে শুরু হয়।এই বিষয়টি বিবেচনায় রেখে আমাকে অগ্রহায়ণ-পৌষের শুরুতে ঘরে ঘরে পৌঁছে দিলে ভালো হয়।
শীতের শেষের দিকে আমাকে বিতরণ করে তো শীতার্ত মানুষের কোন লাভ নেই। তাই আগাম ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে সবিনয় অনুরোধ করছি।
অনেকেই আমাকে নিয়ে প্রদর্শনের রাজনীতি করেন,তবে এর মধ্য থেকেও কিছু মানুষ নেপথ্যে থেকে যান। 
এনারাই প্রকৃত শীতার্ত মানুষের কষ্ট অনুভব করেন।
এনারাই প্রকৃত নেপথ্যের ক্যাকটাস ফুল!
তাই এই নেপথ্যের ক্যাকটাসদেরকেই জানাই সগ্রামী সালাম।
-------
----
২২;১১;২০২০

Post a Comment

0 Comments