রতন কুমার রায়-নীলফামারী প্রতিনিধি: সকালে হিন্দু সম্প্রদায়ের রঞ্জিত রায়ের (৩৮) ওয়েলডিংয়ের দোকানের পিছনে গরু জবাই করে কশাই মো. শাহিন ইসলাম (২৭)। সন্ধ্যায় রঞ্জিত রায় হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েকজন মিলে হাটের একটি দোকানের ভিতর হতে টেনে হিঁচড়ে বের করে শাহিনকে মারধোর করে। এ খবরটি আশপাশে লোকজনের ছড়িয়ে পড়লে, মূহুর্তেই দুই ধর্মের সহস্রাধীক মানুষ ঘটনাস্থলে জড়ো হয়। দুই দলের মধ্যে শুরু হয় বাগতিন্ডা। সংঘর্ষ শুরু হওয়ার মুহুর্তে, পুলিশের উপস্থিতি ঘটে। দ্রুত ওসি মোস্তাফিজার রহমান দুই গ্রুপের মাঝে ঢুকে সবাইকে শান্ত করার চেষ্টা করে। কিন্তু উত্তেজিত কোন পক্ষকেই শান্ত করা যাচ্ছিল না। অবশেষে ওসি’র সাহসী পদক্ষেপ ও বুদ্ধিমত্তায় দুই পক্ষেই সমঝোতায় বসে, নিজেদের মধ্যে সমাধান করে নেয়। ঘটনাটি শুক্রবার নীলফামারীর ডোমার উপজেলার পাঙ্গামটকপুর ইউনিয়নের পীর সাহেবের হাটে ঘটে।
পাঙ্গামটকপুর ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম ভুট্টো ও পাঙ্গা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তরনীকান্ত রায় জানান, পাঙ্গা পীর সাহেবের হাটে বেশ কয়েক দিন হতে গরুর মাংশ বিক্রি নিয়ে কয়েকজন হিন্দু দোকানদারের মধ্যে চাপা ক্ষোভ ছিল। এ নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান এমদাদুল ইসলামসহ বিভিন্ন জনের কাছে তারা অভিযোগও করেছে। শুক্রবার সকালে রঞ্জিত রায়ের ওয়েলডিংয়ের দোকানের পিছনে গরু জবাই করে শাহিন ইসলাম। এতে রঞ্জিত আমাদের কয়েকজনকে অভিযোগ করে। রাতে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে বলে রঞ্জিতকে চুপ থাকতে বলা হয়। কিন্তু রঞ্জিত চুপ না থেকে সন্ধ্যায় কয়েকজনকে নিয়ে শাহিনকে মারধোর করে। এ খবরটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত সহস্রাধীক মানুষ বাগবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। আমরা এলাকাবাসী থামানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হই। ওই সময় ডোমার থানার ওসি মোস্তাফিজার রহমান এসে, সাবাইকে বুঝিয়ে সমঝোতার জন্য আলোচনার ব্যবস্থা করতে সক্ষম হয়। সবাইকে নিয়ে আলোচনা শুরু হলে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনা শবনম, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার(ডোমারÑডিমলা সার্কেল) জয়ব্রত পাল, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মনোয়ার হোসেন উপস্থিত হন। তারাসহ দুই পক্ষের সমঝোতায় উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অবশেষে রাত ১১ টায় দুই পক্ষেই সম্মত হয়, তারা কোন গন্ডগোল বা দাঙ্গায় জড়াবে না। ওসি মোস্তাফিজার রহমানের সাহসী পদক্ষেপ ও উপস্থিত বুদ্ধিতে একটা বড় দাঙ্গা থেকে রেহাই পেলো বলে তারা জানান।
এ বিষয়ে ডোমার থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজার রহমান জানান, সাম্প্রদায়িক গন্ডগোলের খবরে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। উত্তেজিত দুই পক্ষের মাঝখানে ঢুকে তাদের আলাদা করে দেই। জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে নিয়ে আলোচনা করি। দুই পক্ষের গলামিল করে দিয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করি।
0 Comments