বিজ্ঞাপন দিন

শিক্ষা অফিসের অসহযোগিতায় কমিটি বিহীন জলঢাকার ২৪৯ প্রাথমিক বিদ্যালয়



ফরহাদ ইসলাম,জলঢাকা (নীলফামারী) প্রতিনিধিঃনীলফামারীর জলঢাকায় দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর ধরে স্কুল পরিচালনা কমিটি (এস.এম.সি) বিহীন চলছে উপজেলার ২৪৯টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কার্যক্রম। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের অসহযোগিতা ও উদাসীনতায় এ কমিটিগুলো গঠিত হচ্ছে না বলে অভিভাবক মহলের অভিযোগ। ফলে বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার মান ও পরিবেশ ভেঙ্গে পড়ছে। শিক্ষার মান ও পরিবেশ রক্ষায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের পরিপত্র অনুযায়ী প্রতিটি বিদ্যালয়ে ১১ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদ গঠিত হওয়ার কথা। সেখানে একজন সভাপতি, প্রধান শিক্ষক সদস্য সচিব, একজন শিক্ষক প্রতিনিধি, একজন দাতা সদস্য,দুইজন বিদ্যুৎসাহী,চারজন অভিভাবক সদস্য ও সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি থাকবে। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত এ কমিটি বিদ্যালয়ের স্বার্থ সংরক্ষন, শতভাগ উপস্থিতি-মান সম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করণ, দুর্নীতিমুক্ত থেকে সরকারী বরাদ্ধের অর্থ ব্যয় করার দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করবে। কিন্ত উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের অসহযোগিতার কারনে প্রায় ১০ বছর যাবত এসব বিদ্যালয়ের কমিটি গঠিত না হয়ে সংশ্লিষ্ট ক্লাস্টারের একজন সহকারী শিক্ষা অফিসার ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে নিয়ে দুই সদস্যের একটি এডহক কমিটি গঠন করে দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়গুলো পরিচালনা করে আসছেন। ফলে বিদ্যালয়গুলো পরিচালনা পর্ষদে স্থানীয় জনগনের অংশীদারীত্ব না থাকায় বিভিন্ন সরকারি বরাদ্দ বাস্তবায়নে  অনিয়ম,অব্যবস্থাপনা,শিক্ষকদের পাঠদানে নিস্কিয়তা ও স্বেচ্ছাচারিতায় বিদ্যালয়গুলোর লেজে-গোবরে অবস্থায় পরিনত হয়েছে। এর আগে ২০১৯ সালের ৫ সেপ্টম্বর স্ব-স্ব ক্লাস্টার প্রধান সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তারা নোটিশ আকারে নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা করেন এবং অক্টোবর থেকে ৩১ শে ডিসেম্বর পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে ভোট গ্রহনের তারিখও নির্ধারন করেছিলেন। সেই তফসিল মোতাবেক অনেক বিদ্যালয়ে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হলেও অদৃশ্য কারণে ভোটে বিজয়ীদের নিয়ে এখন পর্যন্ত কমিটি গঠন করেননি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে উপজেলার আটটি ক্লাস্টারে দায়িত্বরত আটজন সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার প্রধান শিক্ষকদের সাথে যোগসাজশ করে বিদ্যালয়গুলোতে সরকারীভাবে বিভিন্ন বরাদ্দের উপর খবরদাড়ি করছেন। ভোটে নির্বাচিত উত্তর চেরেঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য ফারুক হোসেন বলেন,‘‘আমরা ২০১৯ সালের তফসিল অনুযায়ি নির্বাচন করে জয়ী হওয়ার দুই বছর অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত স্কুলের প্রধান শিক্ষক বা অফিসের কোন লোক আমাদের খোজ খবর করেননি,আমরা অতিদ্রুত পূর্নাঙ্গ কমিটি চাই।’’ উত্তর চেরেঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিলরুবা চৌধুরী বলেন,‘‘নির্বাচনের পর অফিস আমাদের কাছে বিদ্যুৎসাহী সদস্যের তালিকা চেয়েছিল,তালিকা জমাদানের দুই বছর অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত পূর্নাঙ্গ কমিটির বিষয়ে কোন চিঠি পাইনি।’’ দীর্ঘদিন বিদ্যালয়গুলোতে নিয়মিত পরিচালনা কমিটি না থাকার বিষয়টি স্বীকার করে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নুর মোহাম্মদ বলেন, ‘‘আমি যোগদানের পর নিয়মিত কমিটি করতে তফসিল ঘোষনা করি এবং অনেক স্কুলে ভোটের মাধ্যমে অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচিত করা হয়েছে। কমিটি গঠনে এমপি স্যারের সুপারিশে দুজন বিদ্যুৎসাহী সদস্য প্রয়োজন হওয়ায় আমরা দুই বছর আগে স্যারকে জানিয়েছি,এখনও পাইনি তাই কমিটি গঠনে বিলম্ব হচ্ছে।’’ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ বাহাদুর বলেন,‘‘আমি উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি হলেও শুধুমাত্র দাতা সদস্য মনোনীত করতে পারি,আর কিছু জটিলতায় এমপি মহাদয় বিদ্যুৎসাহী সদস্য না দেওয়ায় এখনও পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠন করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই এডহক কমিটি দিয়েই বিদ্যালয়গুলো পরিচালনা হয়ে আসছে।’’বিদ্যুৎসাহী সদসস্যের পত্র পাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে স্থানীয় সংসদ সদস্য মেজর (অবঃ) রানা মোহাম্মাদ সোহেল বলেন,‘‘ শিক্ষা অফিসারের সাথে আলোচনা করে কমিটির বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’









Post a Comment

0 Comments