বিজ্ঞাপন দিন

জলঢাকায় এলাকাবাসীর বিক্ষোভে বুড়ি তিস্তা নদীর খনন কাজ স্থগিত



মাইদুল ইসলাম ,ডিমলা ( নীলফামারী ) প্রতিনিধি :- নীলফামারী জলঢাকায় ক্যাট প্রকল্পের তিস্তা ব্যারেজের রিজার্ভার আওতায়  বুড়ি তিস্তা নদী খনন প্রকল্পের কাজে এলাকাবাসীর বিক্ষোভের মুখে চলমান কাজ স্থগিত করলেন স্থানীয় প্রশাসন  । এ ঘটনায় তৎক্ষানিক সংঘাতময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করতে দুইটি উপজেলার প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। গতকাল ১৭ই ডিসেম্বর শনিবার দুপুরে ডিমলা সদর ও জলঢাকা উপজেলার গোলনা ইউনিয়নের বুড়িতিস্তা নদীর মধ্যবর্তি স্থানে এ ঘটনা ঘটে। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হলেও বর্তমানে ওই জায়গায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ঘটনার বিবারনে জানা যায়, প্রায় ১শত কোটি ব্যায়ে ৬৪টি জেলার অভ্যান্তরিন ছোট এবং বড় নদী, খাল ও জলাশয় পূর্ন খনন প্রকল্পের আওতায় ১ লক্ষ ৪ হাজার কৃষি জমি ৯ ফিট গভিরতার কাজ ( ক্যাট )  প্রকল্পের মাধ্যমে সরকার খনন কাজের স্বীদ্ধান্ত গ্রহন করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া বুড়িতিস্তা নদীর ১২ শত একর জমি খননের কাজ পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায়  টেন্ডারের মাধ্যমে পায় স্টান্ডার ইন্জিনিয়ারিং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে ৫শত একর জমি খনন করা হবে ওই জায়গায়। সে মোতাবেক ওই নদী ও খাল পূর্ণ খননের কাজ চলছিল। ঘটনার সময় ১৭ই ডিসেম্বর শনিবার দুপুরে আকস্মিক ভাবে ২টি উপজেলার প্রায় ৪ থেকে ৫ হাজার জনতা নৌকা সংবলিত প্রতিচ্ছবির সাদা গেঞ্জি পরিহিত অবস্থায় বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জয় বাংলা, কৃষক বাঁচাও, দেশ বাচাঁও শ্লোগান দিয়ে অতর্কিত হামলা চালায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্টান্ডার ইন্জিনিয়ারিং এর সরঞ্জামাদির উপর।  এ সময় বিক্ষোভকারীরা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন যন্ত্রাঙ্গসে অগ্নিসংযোগ ঘটায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তৎক্ষানিক ডিমলা ও জলঢাকা থেকে ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন নীলফামারী সহকারী কমিশনার ( ভূমি ) ও এক্সিকিউটিভ অফিসার রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, ডিমলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বেলায়েত হোসেন, ডিমলা থানা অফিসার ইনচার্জ লাইছুর রহমান, জলঢাকা থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি ফিরোজ কবির ও ওসি তদন্ত বিশ্বদেব রায় প্রমুখ। এ বিষয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান স্টান্ডার ইঞ্জিনিয়ারিং এর ইন্জিনিয়ার মমিনুর রহমান খাঁন বলেন, ৬৪টি জেলায় অভ্যন্তরিন ছোট নদী, খাল এবং জলাশয় পুন: খনন প্রকল্পের অধীনে ১২শত একর জমির মধ্যে ৫শত একর জমি ক্যাট প্রকল্পের আওতায় বুড়ি তিস্তা নদী খননে দৈর্ঘ্য- ৪.৫০ কি.মি. ও প্রস্থ ২.৫০ কি.মি. এবং ব্যারেজ নির্মান খনন ৬ হেক্টরের মধ্যে ১ লক্ষ ৪ হাজার কৃষি জমি ৯ ফিট গভিরতায় প্রায় ৯০ কোটি টাকা বরাদ্দে কাজ উদ্বোধন কালে অনাকাঙ্কিত এ ঘটনাটি ঘটে। এ বিষয় এলাকাবাসীরা অভিযোগ করে বলেন, আমরা পাকিস্তান আমল থেকে এ সকল জমি চাষাবাদ সহ পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসছি।  এখানে ২টি উপজেলায় প্রায় ৩০ হাজার জনসংখ্যা বসবাস করে আসছে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি আমাদেরকে কোন প্রকার নোটিশ প্রদান না করেই খনন কাজ শুরু করেন। কাজটি শুরু করলে আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে মাথা গুজার ঠাই হারিয়ে ফেলবো। সূত্র মতে ইতিপূর্বে উক্ত জমিতে নিম্ন ল্যান্ড ট্রাইবুনালে ২টি মামলা এবং সিভিল কোটে ১টি চলমান রয়েছে। এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এ সব জমি নিয়ে জেলা কোর্টের ২টি মামলা চলমান রয়েছে। এর পর এ ঘটনার সূত্রপাত হলো। এ বিষয়ে গোলনা ইউপি চেয়ারম্যান মশিয়ার রহমান বলেন, যে হেতু সরকারি প্রকল্পের কাজ সে হেতু উৎসুক বিক্ষোভকারীরা যে ঘটনার সূূত্রপাত ঘটিয়েছে তা অতিরঞ্জিত। এ বিষয়ে জলঢাকা থানা অফিসার ইনচার্জ ওসি ফিরোজ কবির  যুগের আলোকে বলেন,  জলঢাকা উপজেলায় কিছু অংশ রয়েছে। বিক্ষোভকারীদের হামলায় অনাকাঙ্ক্ষিত ও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে  আপাতত চলমান কাজ স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তি নির্দেশ অনুযায়ী কাজ চালু করা হবে।

Post a Comment

0 Comments