বিজ্ঞাপন দিন

জলঢাকায় অনলাইন জুয়ায় সর্বশান্ত।। ঘরে ঘরে বাড়ছে অশান্তি

মর্তুজা ইসলাম, জলঢাকা প্রতিনিধিঃ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ (আইপিএল) সহ পৃথিবীর বিভিন্ন ক্রিকেট টুর্নামেন্টকে ঘিরে নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার সর্বত্র শুরু হয়েছে জমজমাট জুয়ার আসর। নেশা ধরা এই ক্রিকেট জুয়ায় জড়িয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার টাকা খুঁইয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন স্কুল-কলেজ পড়ুয়া যুবকসহ সব শ্রেণি পেশার মানুষ। এমনকি যারা নিরক্ষর তারাও বাজি ধরছেন ক্রিকেট খেলায়। হাত খরচের কথা বলে বাবা-মার কাছ থেকে টাকা এনে, হাতের মুঠোফোন কিংবা ঘরে তোলা নতুন ধান বিক্রি করে এমনকি ঋণ করে টাকা সংগ্রহ করেও সর্বনাশা ক্রিকেট জুয়া খেলছে তারা। ফলে এসব উঠতি তরুণেরা কখনো কখনো জড়িয়ে পড়ছে চুরির মতো ন্যক্কারজনক কর্মকাণ্ডে। এই অনলাইন জুয়ায় অধিকাংশ লেনদেন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে হওয়ায় জুয়ায় জড়িত'রা থাকছে এক প্রকার ধরাছোঁয়ার বাইরে। ফলে,দিন দিন চক্রবৃদ্ধিহারে আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে জুয়াড়িদের সংখ্যা। এই নিয়ে ঘরে ঘরে শুরু হয়েছে অশান্তি। পরিচয় গোপন করে জুয়াড়িদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। অনেকে বলছেন, কিছু ক্রিকেট জুয়াড়ি জুয়ার টাকা জোগাতে গিয়ে চুরি ও ছিনতাইয়ের মতো বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে।একইসঙ্গে ক্রিকেট জুয়ার হার-জিতকে কেন্দ্র করে পারিবারিক ও সামাজিক অস্থিরতা বাড়ছে।অনেকেই কৌতূহল বশত এ খেলা শুরু করার পরেই নেশায় পড়ে যাচ্ছেন। তারা আরও জানান, শুধু আইপিএল খেলাকে কেন্দ্র করেই নয় আন্তর্জাতিক ওয়ানডে, টেস্ট, টি-২০, অখ্যাত অনেক ক্রিকেট-ফুটবলের ঘরোয়া টুর্নামেন্টকে ঘিরে বসে জুয়ার আসর। কোন দল জিতবে, কোন খেলোয়াড় কতো রান করবে, কোন বোলার কয়টা উইকেট নেবে, কোন ওভারে কতো রান উঠবে এ নিয়ে চলে জুয়া খেলার রমরমা অবৈধ বাণিজ্য। ‘ওয়ান এক্স বেট,বেট ৩৬০,মেলবেট’ অ্যাপসের মাধ্যমে আরও নানাভাবে সর্বনিম্ন ২০ টাকা থেকে যত ইচ্ছা তত টাকায় জুয়া খেলা হয় এসব ‘জুয়া পয়েন্টে’। বিকাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন বাজারের চায়ের দোকানে, প্রতিষ্ঠানের কোনায় বসে,আড্ডাস্থলে শুরু হয় জুয়াড়িদের তৎপরতা। উপজেলার বালাগ্রাম ইউনিয়নের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জুয়ারি জানান, অতীতে তিনি পরিবার পরিজন নিয়ে ভালভাবেই দিনযাপন করছিলাম৷ এক বন্ধুর মাধ্যমে ওয়ান এক্স বেট এ্যাপস ব্যবহার করে শুরু করেন অন-লাইন জুয়া। এরপর অধিক লাভবান হওয়ার আশায় একপর্যায়ে জমি বন্ধক দিয়ে নিয়মিত খেলা চালিয়ে যান। বর্তমানে সর্বস্ব হারিয়ে খুবই দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন তিনি। হয়ে গেছেন মাদকে আসক্ত। জানতে চাইলে তিনি আরও জানান, প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকার মতো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তিনি। সুশীল সমাজের প্রতিনিধি উপজেলা স্কাউটস সম্পাদক মর্তুজা ইসলাম জানান, স্মার্ট ফোনের অধিক ব্যবহারে ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া বিমুখ হচ্ছে। জড়িয়ে পড়ছে অনলাইন জুয়ায়। সন্ধ্যা হলেই ঘরের ছেলেরা বই নিয়ে পড়তে বসার কথা থাকলেও মোবাইল নিয়ে খেলা দেখতে বসে। বাজিতে টাকা হারে। মা-বাবার কাছে টাকা চায়। না দিলে শুরু হয় অশান্তি। বাবা-মায়ের সঙ্গে ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়ে তারা। এ ব্যাপারে নীলফামারী জেলা পুলিশ সুপার মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের (পিপিএম) কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনলাইনে জুয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে ইতোমধ্যে বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে অনেককে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। এর বিরুদ্ধে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতেও কাজ করছে পুলিশ। এজন্য সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। আনোয়ার হোসেন,

Post a Comment

0 Comments