বিজ্ঞাপন দিন

জলঢাকায় ৪৮ ঘণ্টার অভিযানে গরুচোর চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ



আবেদ আলী স্টাফ রিপোর্টারঃ নীলফামারীর জলঢাকায় গত দের বছরে অর্ধশতাধিক গরু চুরি হওয়ার ঘটনায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় টানা ৪৮ ঘন্টার অভিযানে গরুচোর চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। উল্লেখ্য, উপজেলাটির বালাগ্রাম ইউনিয়নের শালনগ্রাম, সাইডনালা, বারোগোপাল সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে গত দের বছরে ৪৮ টি গরু চুরি হওয়ার ঘটনায় থানা পুলিশ মঙ্গলবার রাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পৃথক পৃথকভাবে অভিযান চালিয়ে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই চক্রকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে। এবিষয় থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুক্তারুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন গত ২১ হতে ২৩ সেপ্টেম্বর উপজেলার বালাগ্রাম ইউনিয়নের শালনগ্রাম বটতলীর কমল কান্তি রায়ের বাড়ী হতে ৬ টি গরু গরু চুরি হওয়ার ঘটনায় কমল কান্তি নিজে বাদী হয়ে মামলা করেন। যার নং ২৭। এরই সুত্র ধরে জেলা পুলিশ সুপার গোলাম সবুর মহাদয়ের দিক নির্দেশনায় তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে টানা ৪৮ ঘন্টা বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই ৫ গরুচোরকে গ্রেফতার করা হয় এবং এই চক্রটির সঙ্গে আরো কেউ জড়িত থাকলে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে। আটককৃত ব্যাক্তিরা হলেন, পৌরসভার বগুলাগাড়ী ৩ নং ওয়ার্ডের পশ্চিম পাড়া এলাকার আফজাল হোসেনের ছেলে তরিকুল ইসলাম (২৩), বগুলাগাড়ী বারোঘড়ি পাড়ার ধারাবেচাটারীর মৃত বাবুল হোসেনের ছেলে সাদেকুল ইসলাম (২৩), কদমতলী হাজীপাড়ার আব্দুল্লাহর ছেলে ওমর ফারুক (২৫), বগুলাগাড়ী মাঝাপাড়ার হবিবার রহমানের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক, কাঁঠালী ইউনিয়নের পূর্ব কাঁঠালী ক্যানেলেপাড় এলাকার মুকুল চন্দ্র রায়ের ছেলে শংকর চন্দ্র রায় (১৯)। থানা পুলিশ জানায়, আটককৃতদের বুধবার আদালতে সোপর্দ করলে গরু চুরির বিষয়ে আরো জিজ্ঞাবাদের জন্য তাদেরকে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। পুলিশ আরো জানায়, সম্প্রতি উপজেলায় অন্তত ১ শত টির মতো গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে। এই চক্রটি গরু কেনা-বেচা এবং কসাইয়ের কাজে জড়িত। রাতের আঁধারে চক্রটি গরুচুরি করতো এবং দিনে তারা বাজারে জবাই করে মাংস বিক্রি করতো। তাদের বিষয়ে খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। এছাড়াও প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চোর চক্রের সদস্যরা উক্ত চুরির ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং তাদের কাছে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। আসামী তরিকুল, শংকর এবং ছাদেকুল জানিয়েছে তারা প্রথমে জলঢাকা থানা এলাকার বিভিন্ন ব্যক্তির সুপারি বাগান থেকে সুপারি চুরি করে জলঢাকা বাজারে এক ব্যক্তির দোকানে বিক্রি করে আসছিল। এসময় তাদের সাথে আসামী উমর ফারুক, রাজ্জাক এর পরিচয় হয়। পরে তারা একত্রিত হয়ে জলঢাকা থানার বিভিন্ন এলাকা হতে দিনের বেলা ছাগল চুরি করে তরিকুলের ভ্যানে করে বিভিন্ন হাট বাজারে বিক্রি করতো। এভাবে তারা প্রায় ৪০/৫০ টি ছাগল চুরি করে। ধীরে ধীরে তাদের সাথে আরো কিছু চোরের পরিচয় হয় এবং তারা গরুচুরি করার পরিকল্পনা করে। আসামী শংকর এর মামার বাড়ী বালাগ্রাম ইউনিয়নের শালনগ্রাম এলাকায় হওয়ায় তার সহযোগীতায় ছাদেকুল সহ ভ্যানে করে তার মামার বাড়ী থেকে আশপাশ এলাকায় কোন বাড়ীতে গরু আছে তার সন্ধান করে সেই বাড়ীগুলোতে গরুচুরির পরিকল্পনা করতো। পরিকল্পনা মাফিক তারা গত দেড় বছরে সাইডনালা, শালনগ্রাম, বারোগোপাল এলাকায় মোট ৪৮ টি গরু চুরি করেছে। ওসি জানান, তাদের আরো কয়েক জন সহযোগী সহ তারা বিভিন্ন বাড়ী থেকে গরু বাহির করে নির্জন স্থানে অপেক্ষা করতো। আসামী তরিকুল মোবাইল ফোনে উমর ফারুককে কল দিয়ে ডাকলে উমর ফারুক মিনি ট্রাক নিয়ে কাছাকাছি রাস্তায় আসা মাত্রই তারা সকলে মিলে চোরাই গরুগুলো ট্রাকে তুলে দিতো। এভাবে তারা বিভিন্ন রোড দিয়ে চোরাই গরু দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে আসছিল। আসামী তরিকুল, শংকর, ছাদেকুল ইতোমধ্যে বিজ্ঞ আদালতে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। আসামীদের দেয়া তথ্য-উপাত্ত যাচাই বাছাই পূর্বক গরু উদ্ধার সহ অন্যান্য আসামীদের সনাক্ত ও গ্রেফতার প্রক্রিয়া অব্যহত রয়েছে।

Post a Comment

0 Comments